শবে বরাতের আমল ও ফজিলত

শবে বরাত আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রজনী এবং এই শবে বরাতকে কেন্দ্র করে আমাদের জন্য কিছু আমল ও কিছু দোয়া আল্লাহতালা আমাদের জন্য দিয়েছেন। আমরা যতটা সুন্দরভাবে শবে বরাতের এই আমল গুলো করতে পারব অবশ্যই আমাদের জন্য শবে বরাত ততটা ফজিলত পূর্ণ হবে। চলুন আজকে জেনে নেয়া যাক শবেবরাতে আমরা কি কি আমল করতে পারি।

সাধারণত ঈমানদার হিসেবে যেকোনো উপলক্ষ্যকে সামনে রেখে ইবাদত করাটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। যে আল্লাহ তা’আলা আমাদের সৃষ্টি করেছেন সে আল্লাহ তাআলা আমাদের যে কাজগুলো করতে বলেছেন আমাদের সেই কাজগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। তাহলেই তো আমরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে পারব এবং পরকালের জীবনে শান্তিতে থাকতে পারবো।

তবে যারা পরকালের জীবনকে কম গুরুত্ব দিয়ে ইহকালের জীবনকে বেশি গুরুত্ব দেন তাদের মতন বোকা মানুষ হয়তো পৃথিবীতে নেই। তাই সবসময় সুযোগ খুঁজতে হবে আমল করার এবং কখন আমল করলে সেই আমলগুলো বেশি কাজে লাগবে সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। শবে বরাত অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি রজনী তাই এই শবেবরাতে যদি আমরা আমল করতে পারি তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে। চলুন শবে বরাতের ফজিলত ও আমল সম্পর্কে জানি।

শবেবরাতে কি কি আমল করতে হয়

মুসলমানদের জন্য ফজিলত পূর্ণ যে রজনীগুলো রয়েছে তার মধ্যে পাঁচটি রাত হচ্ছে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই পাঁচটি রাতের মধ্যে দুটি রাত হচ্ছে দুইটি ঈদের রাত। আরেকটি রাত হচ্ছে শবে মেরাজের রাত এবং আরো একটি রাত হচ্ছে শবে কদরের রাত। আজকে যে রাত নিয়ে কথা বলবো সেটা হচ্ছে শবে বরাতের রাত এবং সেটা এই পাঁচটি রাতের মধ্যে একটি।

আমরা একটি হাদিস দেখতে পারি যেখানে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর ভাষায় কোন এক শাবান মাসের অর্ধরাতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিছানায় পাওয়া যাচ্ছিল না। খুঁজে দেখা গেল তিনি নামাজে দাঁড়ানো এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে আমরা ধারণা করলাম তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, আমি তখন উঠে তার পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে নাড়া দিলাম, তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়লো,তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে! আমি উত্তরে বললাম, ইয়া রাসুল আল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা?
নবীজি সাঃ বললেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল ই ভালো জানে। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন এটা হল অর্থ শাবানের রাত এ রাতে আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন। ক্ষমাপ্রার্থনা কারীদের ক্ষমা করে দেন অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিশ্বের পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। সু আবুল ঈমান তৃতীয় খন্ড পৃষ্ঠা নম্বর ৩৮২।

এই হাদীস থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি যে শবেবরাতে আমাদের নামাজ পড়াটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং নামাজ পড়া অবস্থায় সেজদা অবস্থায় আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

শবে বরাতের করণীয় ও বর্জনীয়

সাধারণত শবে বরাতে রাতে আমাদের নফল নামাজ আদায় করতে হবে। নফল নামাজ আদায় করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ শবে বরাতের রাতে। এছাড়াও তাহিয়াতুল অজু আমাদের জন্য শবে বরাতের একটি কাজ। এরপরে আমাদের মসজিদে যেতে হবে।

শবে বরাতের দিনে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে হবে আমাদের। এছাড়াও সালাতুত তাসবিহ আদায় করতে পারি আমরা শবে বরাতের রাতে। এছাড়াও আমরা শবে বরাতের রাতে চেষ্টা করব নামাজে কি রাত এবং রুকু সেজদা দীর্ঘ করা।

অনেকেই শবে বরাতের রাতের শেষ অংশে সেহরি খেয়ে পরের দিন নফল রোজা রাখার নিয়ত করেন। যতটা সম্ভব বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করার চেষ্টা করব। তওবা ইস্তেফা অধিক অধিক পরিমাণ পাঠ করবো এবং আল্লাহ তাআলার কাছে দুহাত তুলে ক্ষমা চাইবো এবং দোয়া করব।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *