হাদিসের আলোকে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল

জিলহজ মাস মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলত পাওয়া একটি মাস। আমাদের প্রিয় রবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন বর্ণনাতে ঘোষণা করেছেন যে 12 মাসের মধ্যে সম্মানিত মাস হচ্ছে চারটি এবং তার মধ্যে একটি হচ্ছে জিলহজ মাস। মুসলমান হিসেবে কখনোই জিলহজ মাসকে অবহেলা করা উচিত নয় এবং যতটা সম্ভব আমল করা প্রয়োজন ততটাই আমল করা উচিত এই জিলহজ মাসে।

জিলহাজ মাসের আমল সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে বিভিন্ন ধরনের বর্ণনা আছে আজকে আমরা সেই হাদিসগুলো একটু আলোচনা করার চেষ্টা করব এবং জানার চেষ্টা করব এই হাদিসের আলোকে কি কি আমল আমরা করতে পারি। এখানে যারা এই বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তি আছেন তারা অবশ্যই আমাদের ভুল ত্রুটি গুলো ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং আমাদের জানানোর চেষ্টা করবেন আমরা কোন তথ্য গুলো দিলে সব থেকে বেশি ভালো হতো।

জিলহজ্ব মাসে প্রথম দশ দিনের আমল

আমরা সকলে জানি যে আরবি মাসের মধ্যে জিলহজ মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলত নয় একটি মাস। বিশেষ করে এই মাসের প্রথম যে ১০ দিন রয়েছে সেই ১০ দিন হচ্ছে মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত ব্যস্ত দশ দিন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে সূরা ফজরের মধ্যে এই মাসের প্রথম দশ হাতের কসম খেয়েছেন। এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি যে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন”শপথ ফজর কালের। এবং দশ রাতের-আল ফজর আয়াত নাম্বার ১-২। মুফাসস্রিনে কেরামদের মতে উক্ত 10 রাত বলতে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনকে বলা হয়েছে। তাই এখান থেকে আমরা বুঝতে পারছি যে এই প্রথম ১০ দিনে যদি আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমরা ইবাদত বা আমল করে থাকি তাহলে সেটা আমাদের জন্য কতটা ফজিলত ময় হবে।

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনে কি কি আমল করবেন

সবার প্রথমে জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার আগে আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল করতে পারেন। যাদের কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছে আছে কিন্তু কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই তারা এই জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনকে কেন্দ্র করে চাঁদ ওঠার আগে দাড়ি নখ চুল কাটা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে। এবং জিলহজ মাসের ১০ তারিখের কোরবানির ঈদের নামাজ পড়া পর্যন্ত রেখে নামাজ পড়ে এসে নখ দাড়ি কাটলে একটি কোরবানির সমান সওয়াব পাওয়া সম্ভব হয়।

জিলহজ মাসের ৯ তারিখ হচ্ছে আরাফার দিন এবং এই আরাফার দিনের গুরুত্ব এবং ফজিলত বলে শেষ করা যাবে না। জিলহজ মাসের ৯ তারিখ আরাফার দিনে হাজীরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন এবং সন্ধ্যার আজান পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এই দিনে রোজা রাখতে বলা হয়েছে তাই অবশ্যই জিলহজ মাসের ৯ তারিখে আপনাকে রোজা রাখতে হবে এবং বলা হয়েছে যে এই দিনে রোজা থাকা অবস্থায় ইফতারী কে সামনে রেখে আল্লাহতালার উদ্দেশ্যে যে দোয়া করা হয় সেটা সঙ্গে সঙ্গে কবুল হয়ে যায়।

হাদিসের আলোকে ইবনু আব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত-নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন+জিলহাজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমলের চেয়ে অন্য কোন দিনের আমলে উত্তম নয়। তারা জিজ্ঞাসা করলেন, জিহাদ ও কি নয়? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-জিহাদ ও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ছাড়া যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়ে জেহাদে যায় এবং কিছু নিয়ে ফিরে আসে না। সহি বুখারি হাদিস নাম্বার ৯৬৯।

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমলের মধ্যে যদি আপনার সামর্থ্য থাকে তাহলে হজ পালন করা আপনার জন্য ফরজ করা হয়েছে। এবং সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য কোরবানি প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল তাই আমরা সবসময় এই আমল গুলো করার চেষ্টা করব।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *