রিজিক বৃদ্ধির আমল

আমরা সকলে জানি যে আমাদের রিজিকের মালিক হচ্ছে একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং আল্লাহ তায়ালা এই গোটা সৃষ্টিজগতকে তৈরি করেছেন তাই গোটা সৃষ্টি জগতের রিজিকের মালিক আল্লাহ তা’আলা একাই। তাই রিজিকের ওপর মানুষের কোন হাত নেই এবং আল্লাহতালা যার জন্য যতোটুকু রিজিক নির্ধারণ করে রেখেছেন তার জন্য শতটুকুই রিযিক দেওয়া হবে।

আল্লাহতালা আমাদের বলেছেন রিজিক বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের আমল করতে। তার কারণ হলো রিযিকের সঙ্গে আমাদের হায়াত জড়িত। আমাদের সঙ্গে যে রিযিক নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে সেই রিজিক যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে হয়তো আমাদের জন্য নতুন আর কোনো রিজিক যুক্ত করা হবে না এবং তখনই আমরা মারা যাব। তবে আমরা যদি বিভিন্ন আমলের মাধ্যমে আল্লাহতালাকে খুশি করতে পারি এবং আমাদের রিযিক বৃদ্ধি করতে পারে তাহলে আমাদের হায়াত বৃদ্ধি পাবে এবং আমরা আল্লাহ তায়ালার আমল করার আরো বেশি সুযোগ পাবো।

মহান আল্লাহ তা’আলা অত্যন্ত দয়াশীল এবং মহান আল্লাহ তাআলার রহমত ছাড়া কোন কিছুই করা সম্ভব নয়। আল্লাহ তাআলা তার বরকতের মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়িয়ে দিতে পারে তবে অবশ্যই এখানে আমাদের কিছু আমল করতে হবে এবং সেটা কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক আমল করতে হবে। চলুন কুরআন সুন্নাহর ঘোষণায় রিজিক বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ ১৫ আমল সম্পর্কে জানি।

রিজিক বৃদ্ধির পর্ণরটি আমল

তওবা ইস্তেগফার করা

রিজিক বৃদ্ধির পনেরটি আমলের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে এটি। হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বর্ণনা করেন”যারা বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার করে তাদের সামনে যত সংকটে থাকুক না কেন মহান আল্লাহতালা তার সমাধান করে দেন। মোস্তাদেখে হাঁকেম।

আল্লাহর রাস্তায় দান বা ব্যায় করা

আমরা সকলেই জানি যে দান করাটা কতটা ফজিলতপূর্ণ। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন যে:- (হে রাসুল! আপনি) বলুন, নিশ্চয় আমার রব তার বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনি উত্তম রিজিকদাতা”।সূরা সাবা আয়াত নাম্বার ৩৯।

তাকওয়ার ওপর অটল থাকা

আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস এবং তাকে ভয় করলে তিনি বান্দার প্রতি বরকতও কল্যাণ দান করেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা একটি আয়াতে খুব সুন্দর ভাবে বলেছেন-“আর কেউ আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তার নিষ্কৃতির পথ করে দেবে। আর তাকে তার ধারণাতে উৎস হতে রুজি দান করবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করবে, তার জন্য তিনি যথেষ্ট। নিশ্চয় আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করবেন। আল্লাহ সব কিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা। সুরা তালাক আয়াত নাম্বার ২ এবং ৩।

আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা

বৃদ্ধির জন্য আমরা এই আমলটি করতে পারি সেটি হচ্ছে আমাদের আত্মীয়-স্বজন যারা আছে তাদের সঙ্গে ভালো একটি সম্পর্ক রাখতে হবে। কোনভাবে তাদের সঙ্গে দুঃসম্পর্ক করা যাবে না এতে করে আমাদের রিজিক কমে যেতে পারে।

বারবার ওমরা করা

সাধারণত ওমরা করার সামর্থ্য আমাদের সকলের নেই তবে যাদের সামর্থ্য আছে তারা সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করবেন বারবার ওমরা করতে এতে করে এই রিজিক বৃদ্ধি পাবে। যারা অভাব কমাতে চায় গোনা কমাতে চায় তাদের জন্য বারবার ওমরা করাটা জরুরি এবং এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”যে ব্যক্তি ওমরা করে ওমরা তার গোনা তার অভাব অনেক দূরে পাঠিয়ে দেয়”। তিরমিজি।

বিয়ে করা

সাধারণত আমরা বিয়ে করতে ভয় পাই তার কারণ হলো বিয়ে করলে আমাদের দায়িত্ব বেড়ে যায় এবং খরচ বেড়ে যায়। কিন্তু আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে এই বিয়ে করার ফলেই আপনার রিজেক্ট বেড়ে যাবে এবং সেটার দায়িত্ব আল্লাহ তা’আলা নিজে নেবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন”তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ হীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। সূরা নূর আয়াত 32।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *