রমজান মাসের প্রথম দশ দিনের আমল হাদিসের আলোকে

মুসলমানদের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে মা সেটা হচ্ছে রমজান মাস। তার কারণ হলো এই রমজান মাসে পুরোটা জুড়ে আমল করার কথা আল্লাহ তা’আলা উল্লেখ করেছেন। রমজান মাস সিয়াম পালনের মাস এবং রমজান মাসে ৩০ দিন প্রত্যেকদিন ফরজ সিয়াম পালন করতে আল্লাহতালা আমাদের হুকুম করেছেন।

আল্লাহতালা এই রমজান মাসে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন যার মধ্যে প্রথম দশ হচ্ছে রহমতের দিন। আল্লাহ তাআলা তার তরফ থেকে এই দশদিনে প্রচুর পরিমাণে রহমত বর্ষণ করে এবং যার কারণে আমরা এই দশদিনে বিভিন্ন ধরনের আমলের মাধ্যমে সেই রহমতগুলো অর্জন করার সুযোগ পায়। আজকে আমরা হাদিসের আলোকে এবং কোরআনের আলোকে আলোচনা করার চেষ্টা করব রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন অর্থাৎ রহমতের যে ১০ দিন রয়েছে সেই ১০ দিনে আমরা কি কি আমল করতে পারি। ভালো চলুন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে আমাদের এই আর্টিকেল থেকে।

রমজান মাসের প্রথম দশ দিনের ফজিলত

রমজান মাস সম্পর্কে কোরআনে এসেছে”রমজান মাস যার মধ্যে কোরআন নাজিল করা হয়েছে, লোকদের পথপ্রদর্শক এবং হেদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনা রূপে এবং সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী রূপে”(সূরা আল বাকারা আয়াত 185)। ওপরের
আজ থেকে আমরা স্পষ্টভাবে জানতে পেরেছি যে রমজান মাস কতটা ফজিলতপূর্ণ।

রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন”রমজান বরকতময় মাস তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোজা পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরজ করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজা গুলো। দুষ্ট শয়তানদের এ মাসে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। এ মাসে আল্লাহ কর্তৃক একটি রাত প্রদত্ত হয়েছে, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে মহাকল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো। (শুনান আত তিরমিজি হাদিস নাম্বারে ৬৮৩)

আমরা উপরের আলোচনা বা অপরের হাদিস এবং আয়াত এরপরে অন্য কোন আয়াত প্রয়োজন মনে করি না রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানতে। নিচে আমরা কোরআন ও হাদিসের আলোকে রমজান মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল সম্পর্কে জানব।

রমজান মাসের প্রথম দশ দিন কি কি আমল করতে হয়

রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন অর্থাৎ রহমতের দশ দিনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে ফরজ সিয়াম পালন করা। এই সিয়াম পালন করা ঈমানদার এবং মমিন বান্দা এবং বান্দি উভয়ের ওপর ফরজ করা হয়েছে।

এছাড়াও সময়মতো নামাজ আদায় করতে হবে রমজান মাসের প্রথম দশ দিনে। রমজান মাসের প্রথম দশ দিনে সময় মত জামাতের সঙ্গে সালাত আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।

রমজান মাসের প্রথম ১০ দিনে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে সহি এবং শুদ্ধভাবে কোরআন মাজীদ তেলাওয়াত করা। সহীহ শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ আর সেটা যদি রমজান মাসে হয় তাহলে তো কথা নেই।

অবশ্যই আপনি যদি সহিও শুদ্ধভাবে কোরআন মাজি তেলাওয়াত করতে পারেন এবং অন্যকে শেখানোর যোগ্যতা রাখেন তাহলে এই রমজান মাসে কোরআন মাজীদ ও শুদ্ধভাবে শেখা ও অন্যকে শেখানো আপনার একটি আমল।

সাহারি খাওয়া রমজান মাসের প্রথম ১০ দিনে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। আপনারা যারা পুরো রমজান মাসকে নিজের ভালো কাজগুলো দ্বারা পরিপূর্ণ করতে চাচ্ছে তারা কখনোই ইচ্ছাকৃতভাবে মিস করবেন না।

যদিও সালাতুল তাড়াবির নামাজ পড়া নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে তবে আমাদের যেকোনো একটি মতামত অনুযায়ী সালাতুল তারাবির নামাজ আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। তাই অবশ্যই সালাতুল তারাবির নামাজ আদায় করা একজন মুমিন ঈমানদার ব্যক্তি হিসেবে আপনার কর্তব্য।

সবসময় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা এবং কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা এবং তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া রমজান মাসের প্রথম দশ দিনে আরও গুরুত্বপূর্ণ আমল যে আমলগুলো দ্বারা আপনি আল্লাহ তা’আলা সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *