পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতের পর ফজিলতপূর্ণ কিছু আমল

আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ফরজ কিছু আমল নির্ধারিত করে দিয়েছেন তার মধ্যে সবথেকে উত্তম যে আমল সেটা হচ্ছে সালাত আদায় করা। আমরা সকলে জানি যে বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ এবং সেই নামাজকে আল্লাহ তায়ালা প্রতিদিনের মধ্যে পাঁচবার ফরজ হিসেবে আমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। মুমিন ঈমানদার ব্যক্তি সুস্থ থাকা অবস্থায় কখনো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় থেকে দূরে থাকতে পারে না।

সেই পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের ফজিলত আরো কয়েক হাজার গুণ বৃদ্ধি করতে আল্লাহ তা’আলা এমন কিছু আমল করতে বলেছেন যে আমলগুলো আমরা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের পরে করতে পারি। এবং সেই আমলগুলো দ্বারা আমরা আমাদের নিজের আমলনামা আরো বড় করতে পারে এবং মৃত্যুর পরে জান্নাতকে নিজের জন্য সুরক্ষিত করতে পারি। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ফরজ নামাজের পরে যে আমলগুলো আমরা করতে পারি এবং যে আমল গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা সন্তুষ্ট অর্জন করতে পারি।

ফরজ নামাজের পর যে আমল গুলো করবেন

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরজ নামাজের পরে অবশ্যই কিছু বিশেষ আমল করতেন যে আমলগুলো আমাদের তারা করতে বলেছেন। বিষয়টি আমলের মধ্যে আমরা আপনাদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমলের কথা উল্লেখ করবো যেই আমলগুলো দ্বারা আপনারা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন।

ফরজ নামাজের পরে সালাম ফেরানোর পরে কিছু তার সশব্দে একবার আল্লাহু আকবার আপনাকে করতে হবে। এই প্রসঙ্গে হাদিসে রয়েছে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাজি আল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন”আমি তাকবীর আল্লাহু আকবার দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামাজের সবথেকে অবহিত হতাম” (বুখারী ও মুসলিম)।

প্রত্যেক ফরয নামাজের পরে আপনি তিনবার ইস্তেগফার পাঠ করতে পারেন। আস্তাগফিরুল্লাহ সব থেকে ছোট শব্দ এর পাশাপাশি আরো অন্যান্যভাবে ইস্তেগফার পাঠ করা যায়। সাহবান রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত “তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার সালাত শেষ করতেন তিনবার ইস্তেগফার করতেন” (মুসলিম ১৩৬২)।

ফরজ নামাজের পরে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো একবার বলা আল্লাহুম্মা অন্তাসসালাম ওয়ামিনকাস সালাম ওয়া তাবারাকতা ইয়াজাল জালালী ওয়াল ইকরাম। এটার অর্থ হচ্ছে “হে আল্লাহ তুমি শান্তিদাতা এবং তোমার পক্ষ থেকে শান্তি আসে। তুমি বরকতময় হে মহৎ ও সম্মানের অধিকারী।”

ফরজ সালাতের পরে আয়াতুল কুরসি পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। ফরজ নামাজের পরে আয়াতুল কুরসি পড়ার সম্পর্কে আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতের প্রবেশের পথে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আর কোন বাধা থাকবে না(ইমাম নাসায়ীর দিন রাত্রে আমল ১০০) অর্থাৎ মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে ব্যক্তির জান্নাতের আরাম আয়েশ ভোগ করতে থাকবে।

ফরজ নামাজের পরে আরো বেশ কয়েকটি আমল করতে বলা হয়েছে তার মধ্যে তিনবার তাজবিহর আমল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ৩৩ সুবহানাল্লাহ ৩৩ আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ আল্লাহু আকবার বলবে তার গুনা সমুদ্রে ফেনা পরিমান হলেও ক্ষমা করে দেয়া হবে”(মুসলিম ১৩৮০)।

ফরজ নামাজের পরে আপনি ১০০ বার সুবহানাল্লাহ এবং ১০০ বার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতে পারেন। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন”যে ব্যক্তি ফরজ নামাজের পরে ১০০ বার সুবহানাল্লাহ ও 100 বার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়বে তার পেছনের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে, যদিও তার গোনা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়”(ইমাম নাসের দিন রাতে আমল ১৪০)।

উপরের আলোচনা থেকে পরিষ্কার ভাবে আমরা জানতে পেরেছি যে ফরজ নামাজের পরে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল রয়েছে যে আমলের মাধ্যমে আমরা আমাদের পরকালের জীবনকে খুব বেশি সুন্দর করার সুযোগ পায়।।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *