কোরবানির দিনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল

মুসলিম উম্মাদের জন্য আল্লাহ তা’আলা দুইটি আনন্দের দিন ঘোষণা করে দিয়েছেন একটি হল ঈদুল ফিতর এবং আরেকটি হল ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা কে আমরা কোরবানির ঈদ নামে চিনি এবং এই কোরবানির ঈদে শুধুমাত্র যে কোরবানি দেওয়া আল্লাহতালার পক্ষ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল এমন নয় এর পাশাপাশি আরো কিছু আমল রয়েছে যে আমলগুলো একজন মুমিন ও ঈমানদার ব্যক্তি কখনোই ভুল করবে না।

কোরআন এবং হাদিসের আলোকে আমরা আজকে আলোচনা করার চেষ্টা করব কোরবানির দিনে যে আমলগুলো একজন মুসলমান হিসেবে আপনি করতে পারেন সেগুলো সম্পর্কে। তাহলে চলুন জানি কোরবানি দিলে কি কি আমল করলে আপনি আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন। সাধারণত ঈদের দিন হিসেবে আমরা সব সময় এই দিনটাকে আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে অতিবাহিত করার চেষ্টা করি তবে এখানে অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে যে আমলগুলো করলে আমাদের আনন্দগুলো পরিপূর্ণ হবে।

কোরবানির ঈদের দিনের আমল এবং কোরবানির ঈদের দিনের ফজিলত

কোরবানির ঈদের দিন অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত আনন্দময় একটি দিন। শুধুমাত্র যে যারা কোরবানি দিতে পারে তাদের জন্য এটি আনন্দের দিন এমন নয় যারা কোরবানি দিতে পারে না তাদের জন্য এই দিনটা অত্যন্ত আনন্দের। কোরবানীর দিনের বিশেষ ফজিলত রয়েছে এবং এই দিনে আপনারা চাইলে বেশ কয়েকটি আমল করতে পারেন।

কোরবানি দিলেন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে কোরবানি দেওয়া। তবে এখানে আল্লাহ তায়ালা কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে কারো উপর বাধ্যবাধকতা করে দেননি তার কারণ হলো যার আর্থিকভাবে সামর্থ্য নেই সে কোনোভাবে কোরবানি দিতে পারবে না। তাই শুধুমাত্র সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের কোরবানি করতে বলা হয়েছে।

আপনি যদি কোরবানি দিতে না পারেন তাহলে জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পূর্ব থেকে কুরবানীর নিয়তে আপনার চুল দাড়ি এবং নখ কাটা থেকে বিরত থাকুন এবং কোরবানির ঈদের দিনের নামাজ পড়ে এসে সেগুলো কেটে কোরবানির শোয়া বর্জন করতে পারেন।

এছাড়াও ঈদের দিন খুব সকালে উঠে জামাতের সঙ্গে ফজরের সালাত আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। খুব সকালে আপনাকে উঠতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে জামাতের সঙ্গে ফজরের সালাত আদায় করতে।

কোরবানির দিনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে পরিছন্নতা অর্জন করা। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে গোসল করতে হবে এবং সেটা ফরজ গোসল হতে হবে এর পাশাপাশি আপনাকে উত্তম পোশাক এবং উত্তম সুগন্ধি মেখে ঈদগাহে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

কোরবানির দিনে অবশ্যই ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। তাই অবশ্যই এই দিনটির এই সময়টিকে আপনি নষ্ট করবেন না এবং যতটা সম্ভব কোরবানির ঈদগাহে নামাজ পড়তে যাওয়ার জন্য পায়ে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক ঈদে ডোরাকাটা কাপড় পরিধান করতেন, (বায়হাকী)। উপরে উল্লেখ করে হাদিসটি থেকে প্রতিমান হয় যে ঈদের দিন উত্তম পোশাক পরিধান করা কুরবানী ঈদের দিনের আমল গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি আমল।

এছাড়া আরো একটি বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যেতেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এবং ঈদগা থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতেন (বায়হাকী)।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই ঈদের দিন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হতেন। ফজল ইবনে আব্বাস, আব্দুল্লাহ, আব্বাস, আলী ,জাফর, হাসান, হোসাইন, ও সামা ইবনে জায়েদ ইবনে, হারেসা উম্মে আইমানের ছেলে আয়মান কে সঙ্গে নিয়ে। উঁচু আওয়াজে তাকবীর বলতে বলতে কামারদের রাস্তা ধরে তিনি ঈদগাহে যেতেন এবং নামাজ থেকে ফারেগ হওয়ার পর বাড়ি আসতেন মুচিদের রাস্তা দিয়ে” (ইবনে খুজাইমা)।

উপরে আলোচনা থেকে আমরা কোরআনের আলোকে এবং হাদিসের আলোকে কোরবানির দিনের আমল সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। আশা করবো আপনারাও এখান থেকে যথেষ্ট ধারণা পেতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *