কদরের আমল-লাইলাতুল কদরের রাতে কি কি আমল করতে হয়

লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম রজনী। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বান্দা হিসেবে আমরা যদি আল্লাহ তাআলার কাছে দাবি জানাই যে হে আল্লাহতালা আমরা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মত হওয়ার ফলে আমাদের তো আয়ু কমে গেছে তাহলে এই অল্প আয়ুতে আমরা কিভাবে আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদত করব।

তার উত্তরে আল্লাহ তা’আলা আমাদের দিয়েছেন লাইলাতুল কদর। ওই ব্যক্তি পৃথিবীতে সবথেকে বোকা ব্যক্তি যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেয়েছে কিন্তু সেই লাইলাতুল কদরে আল্লাহতালার কাছে থেকে দোয়ার মাধ্যমে এবং ইবাদতের মাধ্যমে পাপ মুক্ত হতে পারল না। বিভিন্ন হাদিস থেকে আমরা জানতে পেরেছি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আমাদের এই কথাটি বলেছেন।

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা কোরআন শরীফের সম্পূর্ণ একটি সূরা নাযিল করেছেন। এই সূরার ফজিলত এবং এ সূরার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আমল করার বেশ সুফল রয়েছে। আজকে আমরা কথা বলার চেষ্টা করব লাইলাতুল কদরের বিভিন্ন আমল সম্পর্কে এবং আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব কি কি আমল আপনারা করতে পারেন।

কদরের রাতে কি কি আমল করতে হবে

রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজর রাতগুলোকে আমরা লাইলাতুল কদরের রাত হিসাবে তালাশ করতে পারে। আল্লাহতালা চাইলেই হয়তো লাইলাতুল কদর এর রাত আমাদের সামনে ঘোষণা করতে পারতেন কিন্তু তিনি এটা গোপন রেখেছেন তাই আমাদের এই রাত্রি তালাশ করতে হবে। বহু বর্ণনা এবং বহু হাদিস বিশ্লেষণের পরে কোন সমাধানই পাওয়া যায়নি কবে লাইলাতুল কদরের রাত।

সব সমালোচনা সব মতামত সর্বশেষে একই জায়গায় এসে থামে সেটি হচ্ছে রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোর যেকোনো একটি হচ্ছে লাইলাতুল কদর। এর জন্য আমাদের প্রত্যেকটি বেজোড় রাতে আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে জাগ্রত থেকে ইবাদত করতে হবে। লাইলাতুল কদরে আপনি বহু ধরনের আমল করতে পারেন।

লাইলাতুল কদরের রাতে সবার প্রথমে আপনি গোসল করতে পারেন। এই গোসল করার উদ্দেশ্য হচ্ছে পাক পবিত্র হওয়া এবং তারপরে যতটা সম্ভব সুন্দর এবং পরিষ্কার কাপড়-চোপড় পেড়ে এবং উত্তম সুগন্ধি মেখে লাইলাতুল কদর এর উদ্দেশ্যে আমল শুরু করতে হবে।

এখানে লাইলাতুল কদরে আপনি দুই রাকাত করে নফল সালাত আদায় করতে পারেন। বিভিন্ন বর্ণনায় বিভিন্ন ধরনের সূরা ব্যবহার করে লাইলাতুল কদরের সালাত আদায় করতে বলা হয়েছে। তবে প্রত্যেকটি বর্ণনাতে একটি বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেটি হলো লাইলাতুল কদর এর সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট ধৈর্য এবং যথেষ্ট ধীর স্থির ভাবে সালাত আদায় করতে হবে।

দুনিয়াদারীর কথা ভুলে গিয়ে সম্পূর্ণ আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে মগ্ন থাকতে হবে এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টা করবেন সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে নামাজ পড়ার এতে করে আপনার নামাজ যদি কবুল হয়ে যায় তাহলে লাল্লায়তুল কদর এর সম্পূর্ণ সওয়াব আপনার আমলনামায় লেখা হবে যেটা হাজার বছর এর তুলনায় অধিক।

লাইলাতুল কদরে আপনি কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে পারেন। আল্লাহতালার কিতাব কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করলে আপনি এমনিতেই সোয়াপ পান এবং সেটা যদি লাইলাতুল কদরের রাত্রি হয় তাহলে অবশ্যই সেই সোয়াব কয়েক হাজার গুণ বৃদ্ধি করা হবে। সুযোগ বুঝে অবশ্যই কোরআন শরীফ বেশি বেশি তেলাওয়াত করুন লাইলাতুল কদরের।

সবসময় আল্লাহ তায়ালার জিকির করা মনে প্রাণে আল্লাহ তালাকে লাইলাতুল কদরের আরো একটি আমল। হতে পারে আপনি লাইলাতুল কদরের সম্পূর্ণ রাত মসজিদে ইবাদত করতে পারেন হতে পারে আপনি নিজের বাসাতে ইবাদত করতে পারেন আপনি যেখানেই ইবাদত করুন না কেন লাইলাতুল কদরের আমলের মধ্যে অবশ্যই জিকির করবেন মনে প্রানে সব সময়।

দোয়া কবুলের যে বড় বড় সময় গুলো আছে তার মধ্যে সবথেকে ভালো সময় হচ্ছে লাইলাতুল কদর এর রাতে দোয়া করা। আল্লাহ তাআলার কাছে দুই হাত তুলে নিজের চোখের পানি ফেলে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে দোয়া করুন অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তার বান্দা সকল চাওয়া পাওয়া পূরণ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *