জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমল

বাংলা মাসের মত এবং ইংরেজি মাসের মতো আরবি মাসে বা আরবি বছরের রয়েছে মোট বারোটি মাস। এই আরবি ১২ মাসের সর্বশেষ মাস হচ্ছে জিলহজ মাস। মুসলমানদের জন্য এই জিলহজ মাসের প্রচুর গুরুত্ব রয়েছে এবং আপনারা যারা মুসলিম হিসেবে জিলহজ মাসকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাচ্ছেন তাদের অবশ্যই জানা উচিত এই জিলহজ মাসের বিভিন্ন ফজিলত ও আমল সম্পর্কে।

অবশ্যই শেষ নবীর উম্মত হিসাবে আমাদের প্রথম যে দিকনির্দেশনা সম্পর্কে জানতে হবে সেটি হচ্ছে আল কোরআন। আমাদের সব সময় আল-কোরআন পাঠ করতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে আল কোরআনের অর্থ গুলো সঠিকভাবে বোঝার। তারপরে প্রত্যেকটি অর্থের ওপর যে বিশ্লেষণ রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের পড়তে হবে।

এরপরে আসতে হবে আমাদের হাদিস পড়ার উপর গুরুত্ব নিয়ে এবং আপনারা যারা আল কুরআনে কোন আয়াত যদি না বুঝতে পারেন তাহলে অবশ্যই হাদিসের আলোকে সে আয়াতগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। তবে এরপরে যে আমলগুলো আমরা করতে পারি সেগুলো হচ্ছে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো করা।

মুসলমান হিসেবে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন কে যদি আপনি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে আমার মতে সেই ১০ দিনের আমলে আপনাকে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসাবে তৈরি করে দিবে। তাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে নিজেকে তৈরি করা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার জন্য জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

জিলহজ মাসে কি কি আমল করতে হয়

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনে যে গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো রয়েছে তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে সব সময় তাকবির পাঠ করা। মনে মনে তাকবীর পাঠ করতে হবে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনে যত সম্ভব গুনাহ থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। সব থেকে কমন গুনাহ যেটা আমরা করি সেটা হচ্ছে মিথ্যা বলা এবং আমরা চাইলেই মনে মনে শপথ করতে পারি যে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন আমরা কোন মিথ্যা কথা বলবো না। এইভাবে আমরা আস্তে আস্তে মিথ্যা কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে যেটা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে কোনদিনও করেননি অর্থাৎ তিনি তার জীবনে কোনদিন মিথ্যা কথা বলেননি।

জিলহজ মাসের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে কোরবানির দিনে কোরবানি দেওয়া। যদিও এটি সকলের উপর ফরজ নয় কিন্তু সামর্থ্য অনুযায়ী একজন সামর্থ্যবান ব্যক্তিকে অবশ্যই কোরবানির দিনে কোরবানি দিতে হবে যেটি ১০ নম্বর দিনে পালন করা হয়।

জিলহজ মাসের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হচ্ছে জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পূর্ব থেকে প্রথম নয় দিন নিজের আঙ্গুল এবং চোখ কাটা থেকে বিরত রাখা। এখানে যদি আপনি কোরবানির ইন্ডিয়াতে এটা করেন এবং কোরবানির দিনে সকাল বেলা নামাজ পড়ার পরে এসে নখ এবং চুল পরিষ্কার করেন তাহলে এটি কোরবানির সব আপনার আমলনামায় লেখা হবে বলে হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে।

জিলহজ মাসের প্রথম নয় দিন এবং আরাফার দিনে রোজা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল এবং এই আমল যিনি করতে পারবেন তিনি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়ে যাবে। যার কারণে সব সময় আল্লাহর রহমত তার উপর বর্ষিত হবে।

জিলহজ মাসের প্রথম নয় দিনের মধ্যে আপনাদের সবসময় চেষ্টা করতে হবে মনের ভেতরে জিকির করা। সব সময় মনে মনে তওবা ইস্তেফা পাঠ করতে হবে। এইভাবে আস্তে আস্তে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনকে আপনি কাজে লাগাতে পারেন।

এছাড়াও রোজা রাখা এবং ইফতারের আগে ইফতার কে সামনে রেখে দোয়া এবং আরাফার দিনে রোজা রেখে ইফতারি সামনে রেখে দোয়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে।

যারা বুদ্ধিমান মুসলিম তাদের কাছে জিলহজ মাসের দোয়া এবং জুলহাস মাছের প্রথম ১০ দিনের বেশ গুরুত্ব রয়েছে তার কারণ হলো এই দশ দিনকে একজন মুসলিম সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে তার পরকালের জীবন অনেকটাই বেশি সুন্দর হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *