জিলহজ্ব মাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল

আরবি মাসগুলোর মধ্যে যে গুরুত্বপূর্ণ মাস রয়েছে তার মধ্যে জিলহজ হচ্ছে একটি। আমরা বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানতে পেরেছি যে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন 12 মাসের মধ্যে চারটি মাস হচ্ছে সব থেকে সম্মানিত এবং তার মধ্যে একটি হচ্ছে। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব এই জিলহজ্ব মাসে একজন সাধারণ ব্যক্তি কি কি আমল করতে পারে এবং আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে।

এ সম্পর্কে প্রসিদ্ধ হাদিস বিশারদ ইবনে হাজার আজকালানী রহমতুল্লাহি বলেন, জিলহজ্বের প্রথম ১০ টি দিনের বিশেষ গুরুত্ব কারণ হলো এই দিনগুলোতে ইসলামের পাশে রুকুনের সমাহার রয়েছে। অর্থাৎ ইসলামের যে পাঁচটি রুকুন আছে তার প্রত্যেকটি এই ১০ দিনে রয়েছে। এখানে উদাহরণস্বরূপ তিনি উল্লেখ করেন যে ঈমান ও সালাদ অন্য দিন গুলোর মত এ দিনগুলোতেও বিদ্যমান এর পাশাপাশি যাকাত বছরের অন্য যেকোনো সময়ের মতো এ সময় প্রদান করা যায়।

অনেক ফজিলতপূর্ণ আরাফার দিনের রোজার নির্দেশনার ফলে ইসলামের আরেকটি রোকন রোজাও দৃষ্টান্ত এ দশকে পাওয়া যায়। আর ইসলামের আরো একটি রুকন হচ্ছে হজে যেটা আমরা জিলহজ মাসে পালন করে থাকি। তাই তিনি এই জিলহজ মাস এবং জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দশ দিন হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

জিলহজ মাসের আমল সমূহ

মাস হিসেবে রমজান আর দিন হিসেবে এ দর্শক শ্রেষ্ঠ সর্বাপেক্ষা মর্যাদাপূর্ণ। সুরা হজ্ব এর ২৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে”তারা আল্লাহর নামে স্মরণ করে নির্দিষ্ট দিন সমূহের”। আচ্ছা এখানে দিনগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে যেই দিনগুলোতে ঈমানদার মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর নাম স্মরণ করে বেশি বেশি।

জিলহজ মাসের আমলের কথা বলতে গেলে প্রথম ১০ দিনের যে আমল রয়েছে সেই আমল বাদ দিলে কোন ভাবে চলবে না।যারা কোরবানি রাখবেন বলে নিয়ত করেছেন তারা জিলহজ্ব মাসের চাঁদ ওঠার পূর্ব থেকে কুরবানীর নিয়তে নিজের নখ দাড়ি ও চুল কাটা থেকে বিরত থাকুন এবং জিলহজ মাসের ১০ তারিখে নামাজ পড়ার পরে সেগুলো কেটে কোরবানির সোয়াব অর্জন করতে পারেন।

জিলহজ মাসের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে হজ পালন করা। তবে সকলের পক্ষে হজ পালন করা সম্ভব নয় তাই যারা সামর্থ্যবান আছেন তারা এই আমলটি পালন করতে পারেন।

জিরাজ মাসে হজ পালনকারী হাজিরা যখন আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন তখন এই দিন থেকে সকল বিশ্ববাসীর কাছে আরাফার দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ এই দিনে রোজা থেকে আল্লাহতালার কাছে প্রার্থনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।

এছাড়াও যে সকল হাজীরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন তারা রোজা রত অবস্থায় ইফতারকে সামনে রেখে আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া প্রার্থনা করেন এবং বলা হয়েছে যে এই দোয়া এতটাই কার্যকরি যে আল্লাহ তায়ালা সঙ্গে সঙ্গে সে দোয়া কবুল করেন। তাই অবশ্যই আপনি যখন জিলহাদ মাসের আমলের কথা চিন্তা করবেন তখন এই কাজটি থেকে কখনোই বিরত থাকবেন না।

কোরবানি করা জিলহজাল মাসের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। তবে এখানেও যাদের সামর্থ্য নেই তাদের কোরবানি করতে বলা হয়নি তাই যারা সামর্থ্যবান আছে তাদের জন্য এই আমলটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন আপনি চাইলে নিজেকে বিভিন্ন ধরনের আমলের মাধ্যমে পরিপূর্ণ করে রাখতে পারেন। মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকা এবং মনেপ্রাণে সবসময় ইস্তেগফার পাঠ করা এছাড়াও আল্লাহর রাসূলের উদ্দেশ্যে দরুদ পাঠ করা জিলহজ মাসের অন্যতম আমলের মধ্যে কয়েক।

আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করেছি জিলহজ্ব মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো সম্পর্কে এবং আশা করবো আপনারা এখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই আমলগুলো সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা সংগ্রহ করতে পেরেছেন। আমাদের কোথাও যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের অবগত করবেন।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *