জিলহজ মাসের ফজিলত এবং গুরুত্বপূর্ণ আমল হাদিসের আলোকে

জিরাজ মাসের আমল সম্পর্কে আমাদের সকলেরই অল্প কিছু জ্ঞান রয়েছে। আমরা এই আর্টিকেল এর আলোকে আলোচনা করতে চাচ্ছি জিলহজ মাসে একজন মমিন ঈমানদার ব্যক্তি কি কি আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা নৈকট অর্জন করতে পারে। আল্লাহ তাআলার গণনার মাস হচ্ছে বারটি এবং তার মধ্যে চারটি মাস হচ্ছে অত্যন্ত সম্মানিত চার মাস।

এবং যে মাসগুলোতে আল্লাহ তাআলা যুদ্ধ-বিদ্রোহ রক্তপাতকে হারাম ঘোষণা করেছেন তার মধ্যে জিলহজ মাস হচ্ছে একটি। এখান থেকেই আমরা জিলহজ মাসের ফজিলত বা গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছি। বিভিন্ন হাদিসে আমরা বর্ণনা দেখতে পেয়েছি যে প্রথম দশ দিনে রয়েছে বিশেষ আমল ও ফজিলত। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন সম্পর্কে কি বলেছেন।

কুরআনে জিলহজ মাসের মর্যাদা ও ফজিলত

আল্লাহ তায়ালা জিলহজ্জ মাসকে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরেছেন যে তিনি কোরআন শরীফে জিলহজ এর উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত নাযিল করেছেন। কোরআনুল করিমে আল্লাহ তায়ালা সূরা হাযরে জিলহজের প্রথম ১০ রাতের শপথ করে এই দিনগুলোর মর্যাদা তুলেছেন। আজকে আমরা কুরআনের এই আয়াতগুলো সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।

এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,”তারা যেন নির্দিষ্ট দিন সময় আল্লাহকে স্মরণ করে”(সূরা হজ্ব আয়াত নাম্বার ২৮)। তাই আমরা এখান থেকে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের বিভিন্ন গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পেরেছি।

জিলহাজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল এর ফজিলত

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনে আমল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ফজিলত পূর্ণ আমল গুলো যদি আপনি করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই আমলের জন্য জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন কে বেছে নিতে হবে। এখানে হাদিসে এসেছে যে হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”এ দিনগুলোর আমলে তুলনায় কোন আমলই অন্য কোন সময় উত্তম নয়। তারা বলল জিহাদ ও নয়? প্রিয় নবী বললেন”জিহাদ ও না তবে যে ব্যক্তি নিজের জানের সংখ্যা বা সম্পদ নিয়ে বের হয়েছে, অতঃপর কিছু নিয়েই ফিরে আসেনি (বুখারী)।

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনে কি কি আমল করতে হবে

জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে আরাফার দিনের রোজা এবং বিশেষ আমল। আমরা সকলে জানি যে জিলহজ মাসের ৯ তারিখে হাজীরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন এবং সে আরাফার ময়দানে অবস্থানরত অবস্থায় হাজিরা রোজা রাখেন এবং সেখানেই ইফতারি করেন। মুসলমানদের জন্য এই আরাফার দিনের বেশ গুরুত্ব রয়েছে এবং এ আরাফার দিনে যারা রোজা রাখে এবং আরাফার দিনে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দোয়া করে তাদের জন্য এই দোয়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ এবং এই দোয়া আল্লাহ তালা সঙ্গে সঙ্গে কবুল করেন।

জিলহজ মাসের আমলের মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে হজ আদায় করা। তবে এখানে অবশ্যই আর্থিক স্বচ্ছলতা বা আর্থিকভাবে সক্ষম হতে হবে যদি আপনি আর্থিকভাবে সক্ষম হতে না পারেন তাহলে হয় আপনার উপর ফরজ নয়।

জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার আগে থেকে নখ চুল ও মোচ ইত্যাদি না ছাটা। এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে হযরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”যখন তোমরা জিলহজ মাসের চাঁদ দেখতে পাবে এবং তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করে তবে সে যেন চুল নখ কাটা থেকে বিরত থাকে (মুসলিম ইবনে হিব্বান) ।

উপরের যে আমলগুলোর কথা আমরা আলোচনা করলাম এর বাইরে আরো বহু আমলগুলো আপনারা করতে পারেন। আশা করছি সব সময় নিজেকে ইসলামের আলোতে আলোকিত করবেন এবং আল্লাহ তা’আলা যেভাবে চলতে বলেছে সেভাবে চলার চেষ্টা করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *