ঘুমানোর পূর্বের আমল

মুসলমান হিসেবে আমরা প্রত্যেকটি পদক্ষেপ যদি ইসলাম ও শরীয়া মোতাবেক নেই তাহলে সেটা আমাদের আমলের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ঠিক যেমন আমাদের দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ঘুম। সেই ঘুমটি যদি আমরা কুরআন এবং সুন্নাহ মোতাবেক নিয়ম মেনে পারি তাহলে সেটাও আমলের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।

বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনা করা হয়েছে যে আপনি যদি সঠিক নিয়ম মেনে ঘুমাতে যান তাহলে সেই ঘুমের মধ্যেও আপনি ইবাদতে থাকবেন। তাই কখন তার মৃত্যু আসে সেটা কেউ বলে দিতে পারে না এবং আমাদের উচিত এই ঘুমের মধ্যে ইবাদত অবস্থায় থাকায় এতে করে যদি কেউ ঘুমের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন তাহলে অবশ্যই সে জান্নাতি হতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু নিয়ম আছে এবং কিছু আমল আছে যেগুলো ঘুমানোর আগে আপনাকে করতে হবে এবং সেই ভাবেই ঘুমাতে যেতে হবে। যার ফলে আপনি ঘুমের মধ্যে ইবাদত করার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারবেন। মোমিনরা সর্বক্ষণ আল্লাহর জন্য ইবাদতে নিবেদিত এবং মুমিন ব্যক্তি হিসেবে অবশ্যই আপনাকে এই কাজগুলো করতে হবে। চলুন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আমাকে কিছু তথ্য জানি।

ঘুমানোর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ

মুমিন ব্যক্তি হিসেবে অবশ্যই আপনাকে ঘুমানোর আগে কিছু প্রয়োজনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে যেগুলো আপনার ঘুমকে আরো বেশি ভালো করবে এবং এই ঘুমকে আপনার ইবাদতের শামিল করবে।হাদিস থেকে আমরা পেয়েছি হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম “বলেছেন তোমরা রাতে পানাহারের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখো। ঘরের দরজা গুলোকে বন্ধ রেখো। আর সন্ধ্যাবেলায় তোমাদের বাচ্চাদের ঘর থেকে বের হতে দিও না, কারন এ সময় জ্বিনরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোন কিছুতে দ্রুত পাকড়াও করে। ঘুমের আগে বাকিগুলো নিভিয়ে দেবে। কেননা অনেক সময় ছোট ক্ষতিকারক ইদুর প্রচলিত সরিতাযুক্ত বাটি টেনে নিয়ে যায় এবং ঘরের লোককে জালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বুখারি হাদিস নাম্বার ৩৩১৬। এই হাদিসের আলোকে আমরা আমাদের ঘুমানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি।

ঘুমানোর আগে যে সকল আমলগুলো করতে হয়

ঘুমানোর আগে কোরআন শরীফ এবং হাদিস থেকে এমন কিছু আমলের কথা আমরা জানতে পেরেছি যে আমলগুলো আমরা খুব সহজে করতে পারব। চলুন ঘুমানোর আগে আমার সম্পর্কে সঠিক তথ্য গুলো জানি।

আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে, তখন আয়তাল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না। বুখারী হাদিস নাম্বার ২৩১১। তাহলে এখান থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি যে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আমাদের আয়াতুল কুরসী তেলাওয়াত করতে হবে।

সূরা কাফিরুন ইখলাস ও নাস ফালাক পড়ে ফু দেওয়া। এটি ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে আরও একটি সুন্দর আমল যে আমলটি আমরা নিয়মিত প্রত্যেকদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে পড়তে পারি। নৌকা আল আসজায়ি রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন”তুমি সূরা কাফিরুন পরে ঘুমাবে, এতে শিরক থেকে তুমি মুক্ত থাকবে”। তিরমিজি ও আবু দাউদ।

তোমাদের যাওয়ার আগে অবশ্যই কিছু দোয়া পড়ে আপনি ঘুমাতে যেতে পারেন। ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে দোয়া সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”যে ব্যক্তি শয়নের পর আল্লাহর নাম নেয় না, তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বঞ্চনা নেমে আসবে। আবু দাউদ হাদিস নাম্বার ৪৮৫৬। অর্থাৎ অবশ্যই ঘুমানো আগে আপনি যখন শুয়ে পড়বেন তারপরে আপনাকে দোয়া করতে হবে।

ঘুমানোর আগে যে দোয়াগুলো রয়েছে তার মধ্যে হাদীস শরীফে গোনার আগে কয়েকটি দোয়া বর্ণিত আছে। তাদের মধ্যে সবথেকে ছোট দোয়াটি হচ্ছে “আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া”। এর অর্থ হচ্ছে “হে আল্লাহ! তোমার নামে আমি স্মরণ করছি এবং তোমার ওই দয়া আমি পুনর্ জাগ্রত হব।”

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *