গর্ভবতী মায়ের আমল

গর্ভবতী হওয়া অত্যন্ত সৌভাগ্যের ব্যাপার। যারা নারী হয়েও কোনদিন গর্ভবতী হতে পারেননি তাদের কষ্ট কেবলমাত্র তিনি এবং সৃষ্টিকর্তায় বোঝে। আমরা বাইরে থেকে যতই সান্ত্বনা দেই না কেন তার মনের ভিতর যে কষ্টগুলো রয়েছে সে কষ্টগুলোকেও দূর করতে পারে না। তবে সৌভাগ্যবান সেই নারী যিনি গর্ভবতী হতে পারেন এবং এই গর্ভকালীন সময়কে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর একজন সেরা বান্দা হতে পারেন।

সাধারণত খুব কম সংখ্যক নারীর এই গর্ভধারণ বা গর্ভবতী অবস্থায় কাজ করতে হয়। বেশিরভাগ নারী গর্ভবতী অবস্থায় শুয়ে বসে দিন কাটায় এবং সম্পূর্ণ বিশ্রাম এর মধ্যে থাকে। মানুষ হিসাবে আমরা একা থাকতে বা বিশ্রামের মধ্যে থাকতে অপছন্দ করি সবসময় কাজের মাধ্যমে থাকলে আমাদের জন্য সেটা ভালো হয়। আর এই বসে থাকার সময় টাকে গর্ভবতীরা কাজে লাগাতে পারে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের জন্য। সব সময় গর্ভবতী অবস্থায় একজন মহিলার আমল করা উচিত এবং কি কি আমল কিভাবে করা উচিত সে সম্পর্কে আমরা প্রাথমিক ধারণা আজকের আগে গেলে আপনাদেরকে।

গর্ভবতী মায়েরা কি কি আমল করতে পারেন

গর্ভবতী মায়েরা তার সন্তান এবং তার পরিবার এবং নিজের জন্য গর্ভবতী অবস্থায় বহু আমল করতে পারেন। সাধারণত আলাদাভাবে যে বিশেষ কোন আমল করতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আমাদের জন্য যে ফরজ আমলগুলো রয়েছে গর্ভবতী অবস্থায় যদি আমরা সেই ফরজ আমলগুলোও বেশি বেশি করতে পারি তাহলে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তা আমাদের ওপর এত বেশি খুশি হবেন যে তার রহমত সব সময় আমাদের ওপর বর্ষিত হবে।

গর্ভবতী অবস্থায় একজন মাকে সবসময় চেষ্টা করতে হবে গুনাহ থেকে বিরত থাকতে। এটা অনেক সহজ একটি কাজ আপনি চাইলেই নিজের মধ্যে গোনা থেকে বিরত রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন এই গর্ভবতী অবস্থা থেকে।

গর্ভবতী মায়েদের আরো একটি ভালো আমল হচ্ছে এই সময় তারা মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকতে পারে। আমরা জানি যে মিথ্যা বলা মহাপাপ আর গর্ভবতী অবস্থায় এই মিথ্যা বলার কোন প্রয়োজনই পড়ে না তাই এই আমলটি আপনি করতে পারেন।

গর্ভবতী অবস্থায় অবশ্যই আপনাকে আমল হিসাবে পাঁচ ওয়াক্তের ফরজ সালাত আদায় করতে হবে। এখানে এমন বাধ্যবাধকতা নেই যে আপনাকে দাঁড়িয়েই সালাত আদায় করতে হবে আপনি চাইলে শুয়ে বসে অথবা ইশারার মাধ্যমে পাঁচ ওয়াক্তের খরচ সালাত আদায় করবেন এটা হচ্ছে গর্ভবতীদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আমল।

সব সময় জিকিরের মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। গর্ভবতী অবস্থায় সাধারণত বসে বসে দিন কাটতে করতে হয় এবং বসে থাকা অবস্থায় আপনি যখন সৃষ্টিকর্তাকে সব সময় স্মরণ করবেন সৃষ্টিকর্তাও আপনাকে সব সময় খুশি রাখার চেষ্টা করবে।

গর্ভবতী অবস্থায় সবসময় নেককার সন্তানের জন্য আপনাকে বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। আপনার গর্ভে যে সন্তানটি আছে সেই সন্তানটি যেন নেককার সন্তান হয় তার জন্য সবথেকে বেশি বেশি সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইতে হবে।

গর্ভবতী অবস্থায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল যেটি প্রত্যেকটি মায়েরাই করতে পারে। গর্ভবতী অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত করা সব থেকে সহজ এবং আপনি চাইলে নিয়মিত এই আমল করতে পারবেন। সারাটা দিন আপনার কোন কাজ নেই তাহলে আপনি করবেন কি অবশ্যই কোরআন তেলাওয়াত করে সৃষ্টিকর্তাকে খুশি রাখতে হবে। এবং জেনে রাখুন ২০ তম সপ্তাহ থেকে আপনার গর্ভে থাকা সন্তান সবকিছু শুনতে পারবে তাই কুরআন তেলাওয়াত যদি তার গর্ভে থাকা অবস্থায় তার কানে প্রবেশ করে অবশ্যই সে একজন নেককার বান্দা হবে।

সন্তানের জন্য কিছু আমল রয়েছে যেমন প্রথম মাসের পুরো মাস আল ইমরান সবসময় পাঠ করা। গর্ভবতী অবস্থায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে দ্বিতীয় মাসের সূরা ইউসুফ সারা মাস পাঠ করা। তৃতীয় মাসের সূরা মরিয়ম পড়লে সন্তান সহিষ্ণু হবে। যারা বুদ্ধিমান সন্তান চান অবশ্যই চতুর্থ মাসে সূরা লোকমান পড়বেন। রমজান মাসে গর্ভবতী মায়েদের সব সময় সূরা মুহাম্মদ পড়তে হবে। ষষ্ঠ মাসে গিয়ে সুরা ইয়াসিন পড়লে সন্তান জ্ঞানী হবে। সপ্তম অষ্টম নবম ও দশম মাসে সূরা ইউসু ফ এবং মোহাম্মদ এবং ইব্রাহিম কিছু কিছু করবেন। এছাড়াও যদি গর্ভবতী মায়ের পেটের ব্যথা উঠে তাহলে সূরা ইনশিকাক ওরে ফু দিলে পানি খেয়ে ব্যথা কমে যাবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *