ঘুমানোর আগে আমল

আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে ঘুমানোর মধ্যে যদি আমরা সঠিকভাবে নিয়ম মেনে ঘুমাই তাহলে ঘুমের ভেতরেও আমরা ইবাদতের মধ্যে থাকবো। তবে সঠিকভাবে ঘুমানোর জন্য অবশ্যই ঘুমানোর আগে আপনাকে কিছু আমল করতে হবে। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ মোতাবেক ঘুমানোর আগে কি কি আমল একজন ঈমানদার মুসলিমকে করা উচিত সে সম্পর্কে আজকে আমরা প্রাথমিক ধারণা আপনাদের দেওয়ার চেষ্টা করব।

ঘুম মানুষের ক্লান্তি অবসর দূর করে। শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ঘুমের অবদান অসামান্য। তাই ঘুম আল্লাহর অনুগ্রহ ও নেয়ামত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’আলা ঘুম সম্পর্কে বলেছেন যে”তোমাদের এই নিদ্রা কে করেছি ক্লান্তি দূরকারী”। (সূরা নাবা- আয়াত ০৯)

তাই এখান থেকেই আমরা কিছুটা হলে বুঝতে পেরেছি যে মহান সৃষ্টিকর্তা ঘুম আমাদের জন্য কেন তৈরি করেছেন। আপনি যে কাজটি করবেন সেটা যদি আমাদের ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী করেন তাহলে প্রত্যেকটি কাজে আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মধ্যে পড়ে। তবে এর জন্য অবশ্যই ইসলামের নির্দেশনা পদ্ধতি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ মোতাবেক সেই কাজগুলো করতে হবে। এখন আমরা আপনাদের জানাবো ঘুমের আগে কি গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো আপনি করতে পারেন।

ঘুমানোর আগে যে আমল গুলো আপনি করবেন

ঘুমানোর আগে একটি বিশেষ আমল আপনি করতে পারেন সেটি হচ্ছে তিন কূল পরে ফু দেওয়া। দুই হাতের তালু একত্রে মিলিয়ে সূরা ইখলাস সূরা ফালাক সূরা নাস পড়ে তাতে ফু দেবেন। এবং সেই দুই হাতের তালুর মাধ্যমে দেহের যতটা অংশ সম্ভব মাসে করবেন। এই হাদিসটি আমরা পেয়েছি বুখারী হাদিস থেকে যার হাদিস নাম্বার ৫০১৭।

ঘুমাতে যাওয়ার আগে আরো একটি বিশেষ আমল আপনি করতে পারেন সেটি হচ্ছে আয়াতুল কুস্রি পাড়া। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “যে ব্যাক্তির সময় আয়তাল কুরসি পড়বে শয়তান সারারাত তার কাছে আসবেনা”। বুখারি হাদিস ২৩৩১ নাম্বার আয়াত।

আরেকটি বিশেষ আমল রয়েছে সেটি হচ্ছে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া। আপনারা যারা ঈমানদার আছেন তারা অবশ্যই ঘুমানোর পূর্বে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বেন। এ সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারার সেই দুই রাকাত তেলাওয়াত করবে এটা তার জন্য যথেষ্ট হবে।”বুখারি হাদিস ৪০০৮ নং আয়াত।

সূরা কাফিরুন পাঠ করা ঘুমানোর আগে একটি বিশেষ আমল। এই সম্পর্কে সহি তারিব হাদিসে ৬০২ নাম্বার আয়াতে মহানবির একটি বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ” রাতে সূরা কাফিরুন পাঠ করা শিরক থেকে মুক্তি পেতে উপকারী”।

শোয়ার আগে ডান হাত গালের নিচে রেখে আমল করতে হবে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমানোর ইচ্ছে করতেন তখন তার ডান হাত তার গালের নিচে ডাকতেন এবং তারপর দোয়া করতেন।”আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমু-তু ওয়া আহইয়া”। বুখারি হাদিস 6324 নাম্বার আয়াত।

তাজবিহের আমল করা অর্থাৎ ঘুমানো যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে তাসবিহ আমল করতে হবে। আপনি যত বেশি তাজবি আমল করবেন আপনার তত বেশি সওয়াব লেখা হবে।

ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে সূরা মূলক পাঠ করা সম্পর্কে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “যে ব্যাক্তি প্রত্যেক রাতে সূরা মুলক পাঠ করবে এর মধ্যে মহীয়ান আল্লাহ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন ।” তিরমিজি হাদীস শরীফ ২৮৯০।

ঘুমের আগে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে আমল করতেন

আমাদের প্রিয় নবী ঘুমানোর আগে দোয়া পড়তেন। উপরে আমরা যে ছোট্ট দোয়াটি উল্লেখ করেছি তিনি এই দোয়াটি পড়তেন।

আমাদের প্রিয় নবী তারপরে সূরা ইখলাস ও নাস এবং ফালাক করে শরীরে ফু দিতেন।

আয়াতুল কুসরি পড়তেন এবং তিনি আয়াতুল কুষ্টি পড়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

আমাদের প্রিয় নবী সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়তেন।

আমাদের প্রিয় নবী সুরা মুলক পড়তেন ঘুমানোর আগে।

উপরে বর্ণিত প্রত্যেকটি বিষয় আমরা বিভিন্ন হাদিস শরীফ থেকে সংগ্রহ করেছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *