ঈদুল ফিতরের রাতের আমল

ঈদুল ফিতর মুসলমান জাতিদের জন্য অত্যন্ত আনন্দময় একটি দিন। এটি পুরো মাস ফরজ সিয়াম পালনের মাধ্যমে মুসলমানেরা যখন আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের জন্য এটি আনন্দের দিন নির্ধারণ করে দেন। এই দিনটিকে বলা হয় ঈদুল ফিতরের দিন যেটাকে আমরা বাংলা ভাষাতে রোজার ঈদ বলে থাকি। ঈদুল ফিতর সম্পর্কে আমরা সকলে অবগত আছি এবং এই ঈদুল ফিতরে আমাদের কি কি কাজ করতে হবে সে সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি।

কিন্তু এই আনন্দের মাঝে এমন কিছু আমল ও ফজিলত আছে যেগুলো ঈমানদার এবং নেককার বান্দারা কখনোই মিস করবে না। আপনারা যারা ঈদুল ফিতরের রাতে বা ঈদুল ফিতরের যে আমলগুলো এবং আমলের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই আমাদের এখান থেকে ঈদুল ফিতরের রাতের আমল সম্পর্কে জানতে পারবেন। এতে করে আপনি আপনার আমলনামা আরো বড় করতে ঈদুল ফিতরের রাত ব্যবহার করতে পারেন।

ঈদের রাতের ইবাদত সমূহ

আমরা সকলে জানি যে ১৩ তম রোজার ইফতারের সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয় সেই দিন। এবং সেই সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় শাওয়াল মাস। শাওয়াল মাসের প্রথম রাত আল্লাহ তায়ালার কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি রাত এবং এই রাতে ঈদের রাত বলা হয়ে থাকে। তবে এ রাতের ইবাদতকারদের জন্য নবীজি তিনটি বিশেষ মর্যাদা ঘোষণা করেছেন যেটা এখন আমরা আপনাদের জানাবো।

এখানে এই তিনটি মর্যাদা কি? যা চাঁদ রাতের ইবাদতকারীদের জন্য নির্ধারিত সেটা অবশ্যই জানতে হবে। আমরা ধাপে ধাপে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব।

প্রথম যে ফজিলত রয়েছে এই রাতের সেটি হলো চাঁদে রাতের দোয়া ফেরত দেবেন না আল্লাহ তা’আলা। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা এ চাঁদ রাতের ইবাদত বন্দেগী এবং কোন দোয়াই ফেরত দেন না। এ রাতে বান্দা যা চায় তাই পায় এবং এ সম্পর্কে হাদিস একটি সুন্দর বর্ণনা আমরা পেয়েছি।

এখানে বলা হয়েছে যে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর সূত্রে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, “পাঁচটি রাত এমন আছে; যে রাতগুলোতে বান্দার দোয়া আল্লাহতালা ফেরত দেন না। অর্থাৎ বান্দার দোয়া কবুল করেন, রাতগুলো হল:-

সাপ্তাহিক জুমার রাত
রজব মাসের প্রথম রাত
শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত
ঈদুল ফিতরের রাত
ঈদুল আযহার রাত

চাঁদের রাতের ইবাদতে জান্নাত ওয়াজিব। অর্থাৎ আমরা চাঁদের রাতে যে ইবাদত করব তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দেন এটা সকলের জানা উচিত। এ সম্পর্কে হাদিসের এক বর্ণনায় উঠে এসেছে যে-হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন”যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত জেগে থাকবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। জিলহজ মাসের ৮ তারিখের রাত, জিলহজ মাসের ৯ তারিখের রাত, ঈদুল আযহার রাত, ঈদুল ফিতরের রাত, অর্ধ সাবানের রাত।

ঈদুল ফিতরের রাতের আরও একটি ফজিলত হচ্ছে এই রাতে যারা ইবাদত করেন তাদের অন্তর কখনো মরবে না। হাদীস শরীফে বর্ণনা এসেছে যে-হযরত আবু উমামা বা হেলি রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে আল্লাহর কাছে সব পাওয়ার নিয়তে ইবাদত করবে, তার অন্তর সেদিনও জীবিত থাকবে, যেদিন সকল অন্তরের মৃত্যু ঘটবে।”

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি যে এই রাত্রি কতটা মর্যাদা পূর্ণ। তাই ঈদুল ফিতরের রাতে ইবাদত করতে আমরা কখনোই ভুলবো না। বিভিন্ন হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত হয়েছে যে এ রাতে কোন দোয়া ফেরত দেবেন না আল্লাহ তাআলা এবং এই রাতে যারা ইবাদত করবেন তাদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে এবং এই রাতে ইবাদত কারীর অন্তর কখনো মৃত্যুবরণ করবে না। আমাদের যদি কোন ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আমাদের ভুলগুলো আমাদের জানানোর চেষ্টা করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *