চাঁদ রাতের আমল

চাঁদ রাত বলতে বোঝানো হয়েছে আমাদের মুসলিম উম্মাদের জন্য আল্লাহতালা যে খুশির দিন ঘোষণা করেছেন সেই খুশির দুইটি দিনের আগের রাতে। এখানে ঈদের দুইটি রাতের কথা বলা হয়েছে অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের আগের রাত এবং ঈদুল আযহার আগের রাতের কথা বলা হয়েছে। এই রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাত এবং এই রাতের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা।
কোরআন এবং হাদিসের আলোকে আমরা জানার চেষ্টা করব চাঁদ রাতের বিভিন্ন ধরনের ইবাদত এবং যাদের মর্যাদা সম্পর্কে। ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা দুই ঈদেরই চাঁদ রাত বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং এই রাতগুলো আমরা কোন ইবাদতের মাধ্যমে কাটাতে পারি সে সম্পর্কে জানব। রমজান শেষে যে রাত আসে কিংবা যে রাত পেরোলে ঈদ উদযাপিত হয় সেই রাতই হচ্ছে চাঁদ রাত এবং এই রাতে কি কি ইবাদত বন্দেগী আমরা করতে পারি সে সম্পর্কে অবশ্যই জানবো।
চাঁদ রাতের বিভিন্ন ধরনের ইবাদত বন্দেগী
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, যে ব্যাক্তি জুমার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, অর্ধ সাবানের রাত এবং দুইদের রাজসহ এ পাচ রাতে কোন দোয়া করে; সে রাতে তার কোন আবেদনাই ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।”(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক)।
এছাড়া ঈদের আগের রাত তথা চাঁদ রাতে ইবাদতকারীর জন্য আল্লাহতালা জান্নাত ওয়াজিব করে দেন তাই এই সুবর্ণ সুযোগ আমাদের কখনোই মিস করা উচিত নয়। আমরা আমাদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব করতে চাইলে অবশ্যই এই দুইটি ঈদের রাতে কাজে লাগাবো এবং ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহতালার প্রিয় বান্দা হওয়ার চেষ্টা করব।
হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন ‘যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত জাগ্রত থাকবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে”। (আর তারগিব ওয়াচ তারহিব )
চাঁদ রাতের বিশেষ মর্যাদা
চাঁদ রাতের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে এবং এই মর্যাদা কারীদের আল্লাহ তায়ালা অনেক সুন্দর ভাবে পুরস্কৃত করবেন বলে আমরা জেনেছি। বিভিন্ন হাদিস থেকে বন্যায় আমরা জানতে পেরেছি যে এই রাতে যারা ইবাদত করবে তার ইবাদত এর ফলে তার অন্তর কখনোই মরবে না। হাদিসের একাধিক বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে :- হযরত আবু উমামা বাহিনী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে আল্লাহর কাছে স্বভাব পাওয়ার নিয়তে ইবাদত করবে, তার অন্তর সেদিনও জীবিত থাকবে, যেদিন সকল অন্তর মৃত্যু ঘটবে”। (ইবনে মাজাহ)
এই হাদিসের আলোকে আমরা আইডিয়া করতে পেরেছি যে এই রাতে ইবাদত করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাই আমরা বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে এই রাতে এবাদত করব। আমরা যতটা সম্ভব বেশি বেশি নফল ইবাদত করব এবং তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার চেষ্টা করবে যার মাধ্যমে আল্লাহতালা সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।
এবং এই রাতের ইবাদতের সমাপ্তি হিসেবে দুই হাত তুলে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করব অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলের জীবনের ক্ষমা মাফ করে দেবেন। তাই বেশি বেশি করে ঈদের রাতে অর্থাৎ চাঁদ রাতকে কাজে লাগাতে হবে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের জন্য।