আসরের ফরজ সালাতের পর ফজিলত পূর্ণ আমল

আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য প্রত্যেকদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন তার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ওয়াক্ত হচ্ছে আসরের নামাজের ওয়াক্ত। সাধারণত আসরের নামাজের ওয়াক্ত বিকেলের দিকে পরে এবং এই নামাজে যারা নিয়মিত পড়ে থাকেন তাদের জন্য নামাজ পরবর্তী সময়ে এমন কিছু আমল আছে যে আমলগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শুধুমাত্র যে আমাদের জন্য এই আসরের নামাজের পরে ইবাদত করতে বলা হয়েছে এমন নয় আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ইবাদত গুলো করতেন। তাই তার উম্মত হিসাবে আমাদের সব সময় তাকে অনুকরণ করা উচিত এবং আসরের নামাজের পরে গুরুত্বপূর্ণ এই আমল গুলো থেকে নিজেকে দূরে না রাখা উচিত। কোরআন এবং সুন্নাহর আলোকে যে আমলগুলো আজকে আমরা আলোচনা করব আশা করছি সে আমলগুলো সম্পর্কে আপনারা পূর্বে থেকে জানতেন।

আসরের নামাজের পর দোয়া

আসরের নামাজের পর দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল তার কারণ হলো দোয়া কবুল হওয়ার যে বিশেষ সময় গুলো রয়েছে তার মধ্যে আসরের নামাজের পরে দোয়া কবুল হওয়ার সময়টি হচ্ছে একটি। আজিজ এর বিভিন্ন বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে আসরের নামাজের পরে এবং মাগরিবের আজানের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এই সময়টুকু হচ্ছে দোয়া কবুলের সময়।

অর্থাৎ যে বান্দা আল্লাহতালার উদ্দেশ্যে আসরের নামাজ আদায় করার পর বসে থেকে আল্লাহতালার কাছে দুহাত তুলে ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং দয়ার মাধ্যমে কিছু চাইবে আল্লাহতালা সঙ্গে সঙ্গে সেই দোয়াগুলো কবুল করেন। তাই অবশ্যই আপনি যদি আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হতে চান তাহলে কোনভাবে আসরের নামাজের পরের এই সময়টুকু দোয়া করা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন না।

আবু হুরায়রা রহমতুল্লাহি আলাইহির থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,”ফেরেশতারা পালাবদল করে তোমাদের মাঝে এসে থাকে। একদল দিনে একদল রাতে। আশরাফ ফজরের সালাতের উভয় দল একত্রে হয়। অতঃপর তোমাদের রাতযাপনকারী দলটি উঠে যায়। তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের জিজ্ঞাসা করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থাতে রেখে এলে? অবশ্য তিনি নিজেই এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জানেন। উত্তরে তারা বলে-আমরা আপনার বান্দাদের সালাতে রেখে এসেছি। আর আমরা যখন গিয়েছিলাম, তখনো তারা সালাত আদায়তে অবস্থায় ছিল”(বুখারি হাদিস 555)।

উপরের হাদিস থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছি যে ফেরেশতাদের পালাবদলের সময় সুযোগ বুঝে আমরা যে নামাজ আদায় করি সেটা আসরের সালাত হলে আল্লাহ তায়ালার কাছে এটা বর্ণনা করা হবে যে আল্লাহতালার বান্দারা সবসময় নামাজরত অবস্থায় ছিলেন। তাই অবশ্যই আসরের নামাজের পরে নফল ইবাদত গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আসরের নামাজের পরের গুরুত্বপূর্ণ আমল

আসরের নামাজের পরের গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস থেকে আমরা আরো একটি হাদিস সংগ্রহ করতে পেরেছি। আবু হুরায়রা রহমতুল্লাহি আলাইহে হতে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-“তোমাদের কেউ যদি সূর্যাস্তের আগে আসরের নামাজে এক সিজদা পায়, তাহলে সেজন্য সালাত পূর্ণ করে নেয়। আর যদি সূর্যোদয়ের আগে ফজরের সালাতের এক সেজদা পায়, তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেই”(বুখারি হাদিস ৫৫৬)।

অবশ্যই ওপরের হাদিস থেকে আমরা আসরের পরে এবং ফজরের পরে বাকি নামাজগুলো আদায় করার গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছি। এছাড়া আমরা জানার চেষ্টা করে আসর এর নামাজের পরে কি কি ইবাদত আমাদের করা উচিত।

আসরের সালাতের পরে চার রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে। এখানে বিভিন্ন ঘোষণা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে আসরের সালাতের পরে চার রাকাত সুন্নত সালাত আদায় করা মুয়াক্কাদা তাই এটা আদায় করা উত্তম এবং আমাদের প্রিয় নবী নিজে এটা আদায় করতেন। আলী ইবনে আবু তালিব রাহমাতুল্লাহি আলাইহির হতে বর্ণিত তিনি বলেন-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের ফরজ নামাজের আগে চার রাকাত সুন্নত পড়তেন। (তিরমিজি হাদিস ৪২৯)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *