আশুরার ফজিলত ও আমল

আল্লাহ তাআলা তার সৃষ্টির সেরা মানুষকে এমন কিছু ফজিলত এবং আমল দিয়েছেন যে আমলগুলো যে কেউ করতে পারে। আজকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ আশুরা সম্পর্কে কিছু আলোচনা করব এবং কোরআন ও সুন্নাহ আলোকে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব আশুরার ফজিলত ও আমল সম্পর্কে। আপনারা যারা আশুরা সম্পর্কে আগে কিছুই জানতেন না তারা এই আশুরা সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক তথ্য অবশ্যই আমাদের এখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

আশুরা অর্থ হচ্ছে দশম এবং মহররমের যে মাস রয়েছে সেই মাসের দশ তারিখে আশুরা নামে ডাকা হয়ে থাকে। সাধারণত বলা হয়ে থাকে নভোমন্ডলে সৃষ্টি কুলের প্রাথমিক বিভাজন প্রক্রিয়ার সূচনা হয় এই আশুরাতে। হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম এর সৃষ্টি স্থিতি ও উঠান ও অবনমন সব ঘটেছিল এই আশুরাতেই। হযরত নূহ আলাইহিস সালাম এর নওজানের যাত্রা সমাপ্তি ছিল আশুরা কেন্দ্রিক।

এছাড়াও আশুরা সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে যে হযরত মুসা আলাইহিস সালামের সমুদ্র পথের ধাবমান রওনা ও এর তাওয়াক্কুল যাত্রা যে সময় বেছে নেওয়া হয়েছিল তা ছিল আশুরা। এভাবে আল্লাহতালা বিভিন্ন সময় এই আশুরার সময়টিকে বেছে নিয়েছেন তাই এটা মুসলমান জাতির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়।

এমনকি আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনার কথা আশুরার সময়ে বা আশুরা কেন্দ্রিক হতে পারে বলে আশা বা আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। এবং আশুরার সময় এলে আমাদের প্রিয় নবী বিনম্র থাকতেন ও রোজা রাখতেন। তাই আমার মতে আশুরার ফজিলত বলে শেষ করা যাবে না এবং এই ফজিলত সম্পর্কে আমরা যত জানতে চাইব আমাদের জানার পরিধি ততই বৃদ্ধি পাবে।

আশুরার দিনের আরো কিছু ফজিলত

আল্লাহর বানী সর্বশ্রেষ্ট কিতাব কুরআন কারীমে রয়েছে ‘আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর নিকট মাসের সংখ্যা ১২ তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত।”হাদীস শরীফে মহররম কে আল্লাহর মাস বলে আখ্যায়িত দেওয়া হয়েছে এবং পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত সূরা তাও আবার ৩৬ নম্বর আয়াতে অতি সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ চার মাস বলতে জিলকদ মাসে বলা হয়েছে এর পাশাপাশি জিলহজ ও মহরম ও রজব মাসকে বোঝানো হয়েছে।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার দিনের রোজা রাখতেন তাই আমাদের কাছে আশুরার দিনের রোজা রাখা সুন্নত। এর পাশাপাশি আশুরা রোজা সব নবীর আমলে ছিল অর্থাৎ প্রত্যেকটি নবী আশুরার দিনে রোজা রাখতেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় থাকতেও আশুরার রোজা পালন করতেন কিন্তু যখন তিনি মদীনায় আসেন এবং দেখতে পান ইহুদিরা এই দিনে রোজা রাখছে তখন সেই রোজা রাখার কারণ জানতে চাইলেন। সেই প্রশ্নের ইহুদিদের উত্তর ছিল মুসা আলাইহিস সালাম সিনাই পাহাড়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত লাভ করে এই দিনেই এছাড়া আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা তারা উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যই এই রোজা রাখছিলেন বলে ব্যক্ত করে।

ঠিক তখন আমাদের প্রিয় নবী মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মুসা আলাইহিস সালাম এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তোমাদের চেয়েও ঘনিষ্ঠ অতঃপর মহররম মেয়ের নয় থেকে 10 অথবা 10 থেকে 11 মিলিয়ে দুটি রোজা রাখতে বললেন”যাতে ইহুদিদের সঙ্গে সাদৃশ্য না হয় এবং এই সুন্নতি পালন হয়। আমরা সকলে জানি যে রমজান মাসের রোজা হচ্ছে ফরজ রোজা কিন্তু আমরা কি সকলে জানি আশুরা রোজা হচ্ছে নফল রোজা।

আশুরার ব্যাপারে বলতে গেলে আরো বলতে হয় হযরত কাতাদা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন”আসলে রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী আল্লাহ তায়ালা এর উসিলায় অতীতের এক বছরে গুনাহ মাফ করে দেবেন”। উপরের হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি যে আশুরার দিনটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের সকলের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *