আশুরার দিনের আমল

বছরের প্রথম মাস হল মহররম। হিজরী সন মুসলমানদের জন্য নানা কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং নানা কারণে বেশ ঐতিহাসিক। তার কারণ হলো ইসলামের সকল ধরনের বিধান তৈরি করা হয়েছে এই হিজরী সন এর ওপর ভিত্তি করে। এখানে হিজরী সনের প্রথম যে মাস মহররম সেই মাসের ১০ নাম্বার তারিখে বলা হয় আশুরার দিন বা আশুরা দিবস।

পুরানো সুন্নাহর আলোকে আমরা জানতে পেরেছি যে এই মাসের বেশ গুরুত্ব রয়েছে এবং এই দিনের বেশ ফজিলত রয়েছে। আজকে আমরা সেই আশুরার বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করবে এবং এর পাশাপাশি জানানোর চেষ্টা করব মহররম মুমিনদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাস কিভাবে।

কোরআন হাদিসে মহামান্বিত মহররম মাসের ফজিলত

কোরআন হাদিসে এমন কিছু বিষয় মহরম মাস সম্পর্কে বলা আছে যেগুলো আমরা হয়তো অনেকেই জানি। এখানে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে যে “আল্লাহ যেদিন আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকেই মাসসমূহ গণনা আল্লাহ তাআলার নিকট তার বিধান মতে বারটি। এর মধ্যে চারটি হল সম্মানিত মাস। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত দিন। কাজেই এ মাছগুলোতে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।”

এই আয়াতটি আপনি পেয়ে যাবেন সূরা আত তওবা এর আয়াত নাম্বার ৩৬ থেকে। এছাড়াও আপনারা সহীহ বুখারীর একটি হাদিস যে হাদিস নং ৩১৮৯ সেখানে একটি বর্ণনা পাবেন এই সম্পর্কে। এখানে বলা হয়েছে যে হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”আল্লাহ যেদিন আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকে সময় যেভাবে অবস্থিত হচ্ছিল আজও তা সেভাবে আবর্তিত হচ্ছে। ১২ মাসের এক বছর এর মধ্যে চারটি হল সম্মানিত মাস ধারাবাহিকভাবে রয়েছে তিনটি মাস যথা ঝিলকদ, জিলহজ ও মহরম। আরেকটি মাস হলো রজব মাসে যা জুমা দল উখরা বা সাবান মাসের মাঝে অবস্থিত।

আশুরা দিবসের গুরুত্ব ও আমল

আমরা যদি আশুরার আমুল এবং গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে চাই তাহলে এখানে এর গুরুত্ব সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। এই মাসে বিভিন্ন ধরনের আমল আপনি করতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের আমল এবং ফজিলত সম্পর্কে জানতে নবীজি যেভাবে আমল করেছেন সে সম্পর্কে আমাদের অবগত হতে হবে।

আসলে দিন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব আমল করতেন

নবীজির শেষ উম্মত হিসেবে আমাদের সবসময় নবীজির সুন্নাহ পালন করা উচিত এবং আসরের দিনেও আমরা নবীজির সুন্নাহ অনুযায়ী তিনি যে আমলগুলো করতেন সে সম্পর্কে আমরা জানবো

এই মাসে তিনি রোজা পালন করতেন। আমাদের প্রিয় নবী রোজার জন্য রমজান এরপরে যে মাসকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন সেটা হচ্ছে মহররম। বিভিন্ন হাদিস থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে নবীজি রমজান মাসের পরে সব থেকে বেশি আমল করতেন এই মাসে।

এই মাসের ১০ তারিখে বলা হয় আশুরা এবং এই বিশেষ দিনের মর্যাদা ও ফজিলত রয়েছে অনেক। ইতিহাসে অনেক বড় বড় স্মরণীয় ঘটনা আছে এই দিনের। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন “আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করে দেখতে পেলেন যে ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা রাখছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন কি ব্যাপার? তারা বলল এ অতি উত্তম দিন এই দিনে আল্লাহতালা বনি ইসরাইলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে নাজাত দান করেন ফলে এ দিনে মুসা আলাই সালাম রোজা রাখেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তোমাদের আর অপেক্ষা মুছার অধিক নিকটবর্তী, এরপর তিনি এদিনে রোজা রাখেন এবং রোজা রাখার নির্দেশ দেন।”এই হাদিসটি আমরা পেয়ে যাব সহীহ বুখারীতে হাদিস নাম্বার ২০০৪ এ।

এখানে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন আশুরা উপলক্ষে এবং মহররম উপলক্ষে এই মাসে কোন কোন দিন রোজা রাখতে হয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশম মহররম এর সঙ্গে নয় অথবা ১১ মহররম মিলিয়ে দুটি জোড়া রোজা রাখতেন। হাদিসে ৯ মহররমের গুরুত্ব বেশি এবং সেটা পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *