ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোটা বিশ্বজাহানের নবী এবং সব নবীদের নবী। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেটা বলেছেন সেটাই নিয়ম হয়ে গেছে। তাহলে পুরো জীবদ্দশায় তিনি কখনো কোন মিথ্যা কথা বলেননি। আল্লাহতালার সৃষ্টির মধ্যে মানুষ হচ্ছে সবথেকে বড় সৃষ্টি এবং সেই মানুষের মধ্যে সবথেকে উত্তম আমাদের প্রিয় নবী।

প্রিয় নবীর উম্মত হিসেবে জন্মগ্রহণ করতে পেরে অবশ্যই আমরা সকলেই গর্বিত। তবে অবশ্যই আমাদের এই প্রিয় নবীর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য সব সময় আমাদের প্রিয় নবীকে অনুসরণ করে চলতে হবে। তিনি যেভাবে আমল করেছেন তার আমলগুলোকে সম্পূর্ণ অনুসরণ করে আমাদের আমলনামা সাজাতে হবে। আজকে আলোচনা করব আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ নামাজের পরে যে আমলগুলো করতেন সেই সম্পর্কে।

ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়া

আমরা সকলেই জানি যে আল কোরআন হচ্ছে মহাগ্রন্থ এবং এই আল কোরআনের প্রত্যেকটি শব্দে রয়েছে মানব কল্যাণের জন্য বহু উপায়। আয়াতুল কুরসি এমন একটি জিনিস যেটা আপনাকে অনেক বেশি ফজিলত এনে দেবে। প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর কোরআনুল কারীমে মর্যাদাপূর্ণ আয়াত অর্থাৎ আয়াতুল কুরসি পাঠ করা। নিয়মিত এই আমল পড়তে হবে তার কারণ হলো আমাদের প্রিয় নবী এই আমলটি নিয়মিত করতেন।

সম্পর্কে হযরত উমামা রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন”ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাটকারি মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে পাবে জান্নাত”।শুনানে নাসাঈ হাদিস নাম্বার ৯৯১৮

ফরজ নামাজের পরে কি কি আমল করতে হবে

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী ফরজ নামাজের পরে বিশেষ কিছু আমল করতেন। আমাদেরও মমিন বান্দা হিসাবে এবং নবীজির উম্মত হিসাবে আল্লাহর হুকুম ও রাসূলের সুন্নত অনুযায়ী এই আমলগুলো করা উচিত। অন্য সবকিছুর মত প্রত্যেক নামাজের পর কিছু আমল রয়েছে। আমরা বান্ধা হিসেবে যত বেশি এই আমলগুলো করবে আমাদের ততটাই জীবন ততটাই হবে। আল্লাহর রাসূল এই সম্পর্কে বলেন”প্রত্যেক ফরজ নামাজের শেষে কিছু দোয়া আছে, যে ব্যক্তি ওইগুলো পরে বা কাজে লাগায় সে কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না”। সহি মুসলিম হাদিস নাম্বার ১২৩৭।

সবার প্রথমে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজ শেষে তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়তেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়তেন। এই দলিলকে আমরা পেয়েছি মুসলিম হাদিসে হাদিস নাম্বার ১২২২ নাম্বার।

আমাদের প্রিয় নবী তারপরে আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়াজ সালাম, তাওরাত্মা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। এই দোয়াটি পড়তেন। মুসলিম হাদিস 1221।

এই নাম্বারে আমাদের প্রিয় নবী যে কাজটি করতেন সেটি হচ্ছে সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার পড়তেন এরপরে আলহামদুলিল্লাহ 33 বার এবং তারপরে আল্লাহু আকবার ৩৩ বার পড়তেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারপরে পড়তেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু; লাহুল মূলকু; ওয়ালা হুল হামদু; ওয়াহুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির; একবার পড়তেন। এই দোয়াগুলো পাঠে গুনাসমূহ সমুদ্রের ফেনার রাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়। মুসলিম হাদিস ১২৪০।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন”যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ব্যতীত আর কোন বাধা থাকবে না”। নাসাঈ হাদিস ৯৪৪৮।

“আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার”সাতবার ফরজ ও মাগরিব নামাজের পরে আপনি পড়তে পারেন। এতে করে সেদিন বা সেই রাতে মারা গেলে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন। আবু দাউদ হাদিস নাম্বার ৫০৮০।

আরেকটি আমল আপনি করতে পারেন সেটি হচ্ছে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক সূরা নাস প্রত্যেকটি তিনবার করে ফরজ ও মাগরিবের পর পড়তে পারেন। এটা পাঠ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন সকাল সন্ধ্যায় এগুলো পাঠ করলে তোমার আর কিছুরই দরকার হবে না

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *