শবে মেরাজের আমল

শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে মেরাজ বলা হয়। আজকে আমরা মহামান্বিত এই রাতের সম্পর্কে যে আমল গুলো বিভিন্ন হাদিস এবং কুরআনে বর্ণিত আছে সে সম্পর্কে। আপনারা যারা শবে মেরাজ সম্পর্কে কিছুই জানেন না তারা অবশ্যই আমাদের আর্টিকেল পড়বেন যেখান থেকে শবে মেরাজের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য আপনারা প্রাথমিক অবস্থাতে সংগ্রহ করতে পারবেন।

প্রত্যেকটি মুসলমানের উচিত আরবি বছরের প্রত্যেকটি তারিখ সম্পর্কে এবং প্রত্যেকটি মাস সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা রাখা। যেহেতু আমাদের শেষ নবী এবং সব নবীদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৌদি আরবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং সেই সৌদি আরবের ভাষা ছিল আরবিতে তাই সে আরবি মাসকে কেন্দ্র করে আমাদের সকল আমল সাজানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হচ্ছে শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত যেটাকে সকলেই আমরা শবে মেরাজ নামে চিনি।

শবে মেরাজ কি এবং এর ইতিহাস কি

সাধারণত প্রত্যেকটি ঐতিহাসিক দিনের পেছনে একটি করে ইতিহাস আছে এবং আল্লাহ তা’আলা আমাদের এই সম্পর্কে কোরআনে জানিয়ে দিয়েছেন। শবে মেরাজ কথাটি আরবি থেকে এসেছে সবে মানে রাত এবং মেরাজ মানে উর্ধ্ব গমন। শবে মেরাজ মানে ঊর্ধ্ব গমনের রাত। বিভিন্ন হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে হচ্ছে অলৌকিক অসামান্য মহা পুণ্যে ঘেরা রজনী বলা হয় শবেবরাজকে যেটাকে আমরা মহামান্বিত লাইলাতুল মেরাজ বলে থাকি।

এই রাতের পেছনে ইতিহাস হচ্ছে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত জিব্রাইল আলাইহি সাল্লাম এর সাথে পবিত্র কাবা হতে ভূমধ্যসাগরের পূর্বে তীর ফিলিস্তিনে অবস্থিত বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের ওপরাতুল মুনতাহা হয় ৭০ হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশের আজিমে মহান আল্লাহতালার দিদার লাভ করেন। এবং এই মহামান্বিত রাতেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন আমাদের প্রিয় নবী। তাই এ রাতকে অনেক মহামান্বিত রাত হিসেবে ধরা হয়।

শবে মেরাজের সকলের নফল নামাজ ও ইবাদত সমূহ

যারা ঈমানদার এবং যারা বুদ্ধিমান তারা কখনোই গুরুত্বপূর্ণ দিন এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে আমল করা থেকে বিরত থাকেন না। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি যে গুরুত্বপূর্ণ দিন এবং যে ফরজ আমলগুলো আছে সেগুলো যদি আমরা মিস না করি তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারব যে আমরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়ে গেছে। আজকে আমরা আলোচনা করব সবে মেরাজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল নিয়ে।

শবে মেরাজে অবশ্যই আমাদের সালাত আদায় করতে হবে এবং এই সালাত আদায়ের কিছু নিয়ম রয়েছে। কিছু কিছু হাদিস মতে দুই রাকাত নিয়তে কমপক্ষে 12 রাকাত সালাত আদায় করতে হবে শবে মেরাজের। তবে আপনি যত রাকাতই সালাত আদায় করুন না কেন চেষ্টা করুন সে নামাজগুলো যেন ধৈর্য সহকারে এবং যত বেশি সূরা পড়া যায় তত বেশি সূরা পড়ে পড়া হয়।।

শাবান মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত

শুধুমাত্র শবে মেরাজ শাবান মাসের গুরুত্বপূর্ণ রজনী এমন নয় শাবান মাসে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত আছে যেগুলো আপনি চাইলে করতে পারেন। হাদিস থেকে বর্ণিত আছে যে উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাস ছাড়া সবচেয়ে বেশি রোজা পালন করতেন শাবান মাসে’। অর্থাৎ আপনি বুঝতে পারছেন শাওয়াল মাসের রোজা পালন করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাজিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন ‘যখন রজব মাস আসতো তা আমরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলের অধিক্য দেখে বুঝতে পারতাম’। এখানে বিভিন্ন হাদিসের বিভিন্ন ধরনের বর্ণনা আছে তবে কোন কোন বর্ণনায় পাওয়া গেছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাসে ১০ টি রোজা রাখতেন আবার শাবান মাসে ২০ রোজা রাখতেন এবং রমজান মাসে ৩০ টি ফরজ রোজা রাখতেন।

আমাদের সব সময় গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে ইবাদত করা উচিত তার কারণ হলো এই ইবাদত গুলোই আমাদের আখিরাতে কাজে আসবে যেটা সব থেকে মূল্যবান সম্পদ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *