শবে বরাতের রাতের আমল

শবে বরাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রজনী এবং মুসলমান হিসেবে আমরা যদি এই শবে বরাতকে কাজে লাগাতে পারি তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা আমাদের ওপর সন্তুষ্ট হবেন এবং আমাদের ভালোবাসবেন। তাই যখন আমাদের জীবনে শবে বরাত আসবে তখন অবশ্যই এই শবেবরাতকে কোনভাবেই অবহেলা না করে আমাদের আল্লাহ তাআলার সুন্নাহ এবং কোরআন মোতাবেক আমল করা উচিত।

আমরা সব সময় ঈমানদার মুমিন ব্যক্তি হওয়ার চেষ্টা করবে এবং এমন সুযোগগুলো খুঁজবো যে সুযোগগুলোতে ইবাদত করলে আল্লাহ তা’আলা বেশি বেশি খুশি হবেন। তার মধ্যে শবেবরাত হচ্ছে একটি। লাইলাতুল বরাত অর্থাৎ শবে বরাত এবং এই শবে বরাত শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত্রিকে ধরা হয়। ধর্মপাল মুসলমানেরা এবাদত বন্দেগী ও জিকির আজকালের মধ্য দিয়ে এই রাত অতিক্রান্ত করেন। বিভিন্ন গণনাতে এড়াতে মহান আল্লাহ বান্দাদের জন্য তাঁর রহমতের দরজা খুলে দেন।

শবে বরাতের নফল নামাজ ও ইবাদত

বিভিন্ন বর্ণনা বিভিন্ন ধরনের ইবাদতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে আজকে আমরা কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে বিভিন্ন হাদিস দেখব যে হাদিসে শবে বরাতের নফল নামাজ ও ইবাদত সম্পর্কে আদেশ দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”যখন সাবানের মধ্যেও দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে (ইবনে মাজ)। এছাড়াও আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস আমরা জানতে পেরেছি।

শবে বরাতের আমল সম্পর্কে হযরত আলী রাজিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”১৪ সাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাত্রি ইবাদত বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো। কেননা এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তা’আলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসে এবং আহ্ববান করেন; কোন ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব; কোন রিজিক প্রার্থী আছে কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোন বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব। এইভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহতালা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন (ইবনে মাজাহ হাদিস নাম্বার ১৩৮৪)।

উপরের আলোচনা থেকে এটা আমাদের জন্য যথেষ্ট যে সবে বরাতে রাত আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও আরব বহু হাদিস পাওয়া যায় শবে বরাতের আমল সম্পর্কে তবে আমাদের কাছে এ দুটি হাদিসই যথেষ্ট যে হাদিসের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি যে শবে বরাতে রাতে আমাদের যত বেশি উচিত তত বেশি নফল ইবাদত গুলো করা।

এবং দিনের বেলায় অবশ্যই রোজা রাখতে হবে তার কারণ হলো রোজা রাখার ফজিলত অত্যন্ত বেশি এবং রোজা এমন একটি ইবাদত যেটা শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্যই করা হয়। তাই যারা শবে বরাতের আমল করতে চাচ্ছেন তারা শবে বরাতের রাতে নফল আমলগুলো করবেন এবং এর পাশাপাশি ভোরবেলাতে সেহরি খেয়ে রোজা রাখবেন।

শবে বরাতের কি কি আমল করতে হবে

শবে বরাতের বেশ কয়েকটি আমলের তালিকা আমাদের কাছে আছে যে আমলগুলো আপনারা করলে প্রচুর ফজিলত অর্জন করতে পারবেন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন। বিভিন্ন হাদিসের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে শবে বরাতের এই মহামান্বিত রজনীতে আল্লাহ তা’আলা প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং তার বান্দাদের সকল চাওয়া পাওয়া পূরণ করেন। তাই আল্লাহুতালার এতটা কাছে গিয়েও যদি আপনি অভাগার মতো আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে কিছু যেতে না পারেন এবং ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তালাকে খুশি না করতে পারেন তাহলে আপনার মত বোকা মানুষ আর নেই।

শবে বরাতের রাতে অবশ্যই নফল নামাজ পড়তে হবে এবং এর পাশাপাশি নামাজের রুকু সেজদা দীর্ঘ করতে হবে।

পরের দিন নফল রোজা পালন করতে হবে এবং রোজা থাকা অবস্থায় এবং শবেবরাতের রাতে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে।

দরুদ শরীফ বেশি বেশি পাঠ করতে হবে এবং তওবা ইস্তেগফার অধিক পরিমাণে পড়তে হবে।

দোয়া কালাম সহজ আসবি তাহলিল জিকির আজকের ইত্যাদি করা এবং অনেকেই কবর জিয়ারত করেন এই শবে বরাতের দিনে।

সাথে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়ার মাধ্যমে মনের সকল চাওয়া পাওয়া জানানো।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *