শাওয়াল মাসে কি কি আমল করতে হবে

আরবি এক বছরে মাসের সংখ্যা হচ্ছে বারটি এবং এই বাঁশের মধ্যে দশম মাস হচ্ছে শাওয়াল মাস। বরকতময় মাসগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে শাওয়াল মাস। আমরা যদি শাওয়াল শব্দটির আভিধানিক অর্থ খুঁজতে যায় তাহলে শাওয়াল শব্দটির আবেদুনিক অর্থ দাঁড়ায় উঁচু উন্নত বা ভারী হওয়া ইত্যাদি। এখানে রমজান মাসে আল্লাহর রহমতের কারণে পৃথিবীতে শান্তির বার্তা প্রবাহমান থাকে এবং মানুষ চেষ্টা করে নিজেকে সবসময় সব ধরনের পাপ কাজ থেকে দূরে রাখতেন।

তবে রমজান মাস যখন বিদায় নেয় তখন আমাদের মধ্যে কেন জানিনা একটু আলাদা ধরনের মনোভাব সৃষ্টি হয় যেখানে আমরা আমল থেকে অনেক বেশি দূরে সরে যেতে থাকে। মূলত আমরা শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যায় এবং আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুতি ঘটে আমাদের আর ঠিক তখনই যারা মুমিন এবং ঈমানদার ব্যক্তি আছে তারা আল্লাহ তাআলার পথে হাঁটতে এই শাবান মাসকে বেশি কাজে লাগায়। তাই রমজান মাস বিদায় নেওয়ার পরে যে শাওয়াল মাসটি আসে সে শাওয়াল মাসে কি গুরুত্বপূর্ণ আমল আমরা করতে পারি সে সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে এবং নিজেকে ধারাবাহিক ভাবে আল্লাহ তায়ালার আমলে ব্যস্ত রাখতে হবে।

শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ম

হিজরনের ১০ নাম্বার মাস হচ্ছে শাওয়াল মাস এবং এই মাসে আমল ও ইবাদতের জন্য অত্যন্ত উর্বর ও উপযোগী বলে ঘোষণা করা হয়েছে। শাওয়াল মাসের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে রোজা রাখা এবং এখানে ছয়টি রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে। এই সম্পর্কে আমরা বেশ কয়েকটি হাদিস সংগ্রহ করতে পেরেছি আশা করব সেই হাদিসের আলোকে আপনাদের সঠিক তথ্য দিতে পারবো।

আবু আইয়ুব আনসারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। এ হাদিসে তিনি বর্ণনা করেছেন যে আল্লাহর রাসূল হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসের সব ফরজ রোজাগুলো রাখল অতঃপর শাওয়াল মাসে আরও ছয়টি রোজা রাখলেও সে যেন সারা বছর ধরেই রোজা রাখল (সহি মুসলিম হাদিস নাম্বার ১১৬৪)।

অর্থাৎ আপনি যদি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে চান এবং একটি বছরের প্রত্যেকটি দিনের রোজার সব অর্জন করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমত রমজান মাসের প্রত্যেকটি ফরজ রোজা পালন করতে হবে। এরপরে যখন রমজান মাস শেষ হয়ে যাবে এবং শাওয়াল মাস আসবে সেই শাওয়াল মাসে আপনাকে আরো ছয়টি রোজা পালন করতে হবে এবং সেই রোজা পালনের মাধ্যমে আপনি একটি বছরে রোজাদার সব অর্জন করতে পারবেন।

শাওয়াল মাসের সুন্নত রোজা সমূহ

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাওয়াল মাসে রোজা রাখতেন এবং এই রোজা রাখা তাঁর উম্মতদের ওপর সুন্নত করা হয়েছে। যেহেতু আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই এই আমল করেছেন তাই অবশ্যই তিনি আমাদেরকে এই আমল করতে হুকুম দিয়েছেন। তাই মুমিন ঈমানদার ব্যক্তি হিসেবে আমরা অবশ্যই শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা কখনোই মিস করবা না তার কারণ হলো এই রোজার মাধ্যমে আমাদের রমজান মাসের ইবাদত পরিপূর্ণ হবে।

যেহেতু আমাদের প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ সাঃ এই ছয়টি রোজা নিজেই পালন করতেন তাই এটা আমাদের জন্য সুন্নত ইবাদত হিসেবে ধার্য করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন”আল্লাহতালা শাওয়াল মাসের ছয় দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি এই মাসে ছয় দিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রত্যেক সৃষ্ট জীবের সংখ্যার সমান নেকি দেবেন, সমপরিমাণ গুনাহ মুছে দেবেন এবং পরকালে তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন।

উপরের ঘোষনা থেকে আমরা খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি যে শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোজা রাখাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষের জন্য। বুদ্ধিমান মমিন ব্যক্তি হিসেবে কখনোই শাওয়াল মাসের রোজা মিস করা উচিত নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *