শাওয়াল মাসের আমল ও ফজিলত হাদিসের আলোকে

মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমলের মধ্যে শাওয়াল মাসের আমলগুলো হচ্ছে একটি। যারা সবসময় আল্লাহতালাকে খুশি করে পথ চলতে চাই তারা এই ধরনের সুযোগ কখনোই মিস করেনা। আজকে আলোচনা করা হবে শাওয়াল মাসের ফজিলত এবং গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে যে আমলগুলো করতে হাদিসে বলা হয়েছে। মুসলমান হিসাবে সবসময় আপনাকে কোরান এবং সুন্নাহকে ফলো করা উচিত এবং সেই কোরআন এবং সুন্নাহর সঠিক দলিল আপনি হাদিসের মাধ্যমে পাবেন।

আমরা এখানে যে যুক্তি আপনাদের দেব সেই যুক্তিতে আলোকে যে হাদিসগুলো রয়েছে সে হাদীসগুলো সঙ্গে সঙ্গে সংযুক্ত করার চেষ্টা করবো যার মাধ্যমে আপনারা শাওয়াল মাসের রোজাগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন।

শাওয়াল মাসের রোজা রাখার ফজিলত

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাওয়াল মাসে রোজা রাখতেন। এই কথাটি বলার পর হয়তো আপনাদের আর কোন কথা বলার প্রয়োজনই পড়বে না তার কারণ হলো আমাদের প্রিয় নবী যেই কাজটি করতেন সেই কাজটি করা আমাদের জন্য সুন্নাত।

শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত। এই প্রসঙ্গে আমাদের প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন”যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং সাওয়ালে আরো ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন পূর্ণ বছরে রোজা পালন করল”(মুসলিম ১১৬৪; আবু দাউদ 2433; তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, সহি আলবানী)।

শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা কতটা ফজিলতপূর্ণ সেটা উপরে হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি। এবং এই দলিলটা কতটা শক্ত দলিল সেটা সম্পর্কে আমরা হয়তো হাদিসটা পড়লে বুঝতে পারি তার কারণ হলো ইতিহাসের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সব থেকে শক্তিশালী যে হাদিসগুলো রয়েছে তার প্রত্যেকটিতেই এই হাদিসের বর্ণনা আছে। আপনি যদি শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখতে পারেন এবং ঠিকঠাক ভাবে রমজান মাসের প্রত্যেকটি ফরজ রোজা পালন করতে পারেন তাহলে আল্লাহ তাআলা আপনাকে পুরো বছরের রোজা রাখার সওয়াব দেবে ইনশাআল্লাহ।

এছাড়াও রমজানের যে রোজা গুলো ছুটে যায় বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে কয়েকটি রোজা ছুটে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার এবং সেই রোজাগুলো আদায় করা যাবে এই শাওয়াল মাসে। রমজানের কাজা রোজা রাখার জন্য সংকীর্ণ সময় হলেও তার আগে নফল রোজা রাখা বৈধ অশুদ্ধ। ফরজ রোজা কাজা করার আগে নফল রোজা রাখতে পারবেন এই সম্পর্কে একটি হাদিস খুব সুন্দর ভাবে দেওয়া আছে।

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন”আমার উপর রমজানের যে কাজা রোজা বাকি থাকতো; তা পরবর্তী সাবান ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না”বুখারী ;১৯৫০ মুসলিম ১১৪৬)।

শাওয়াল মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল সমূহ

আমরা সকলে অবগত আছি যে রমজান মাসের যে রোজা আমরা পালন করি সেখানে প্রায়ই ৩০ টা রোজা ফরজ রোজা হিসেবে আমাদের পালন করতে হয়। এবং এর পাশাপাশি আমরা চাইলে শাওয়াল মাসে আরো ছয়টি রোজা পালন করতে পারে যেটা পালন করা আমাদের জন্য সুন্নত। রমজান মাসের ৩০ টি রোজা এবং শাওয়াল মাসের আরো ছয়টি রোজা পালন করলে আমাদের সারা বছরের রোজা পালন করা হয়ে যাবে এটা হাদিসে এসেছে।

আমরা যদি হিসাব করি তাহলে একটি বছরে মোট ৩৬৫ দিন আছে এবং এখানে আমরা রমজান মাসে মোট ত্রিশটি রোজা এবং শাবান মাসের মোট ছয়টি রোজা পালন করলে ৩৬ টি রোজা পালন করা হবে। এ সম্পর্কে হাদিস শরীফে দেওয়া আছে”প্রতিটি নেক আমলের সব আল্লাহর আব্দুল আলামিন কমপক্ষে দশ গুণ করে দিয়ে থাকেন (সূরা ৬ আনতাম আয়াত ১৬০)।

তাহলে একটু গভীরভাবে ভাবলেই আমরা বুঝতে পারি মোট এই ছত্রিশটি রোজা যদি আমরা পালন করি তাহলে আল্লাহ তা’আলা এই রোযা গুলোকে কমপক্ষে ১০ গুন বাড়িয়ে দে ৩৬০ টি রোজার সমান সওয়াব আমাদের দেবে তার মানে এক বছরে রোজা রাখার সওয়াব আমরা পাচ্ছি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *