শাবান মাসের ফজিলত ও আমল

আরবি মাসগুলোকে খুব সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে এবং এই আরবি মাসগুলোতে আমাদের ইবাদত দিয়ে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। আজকে আমরা কথা বলবো গুরুত্বপূর্ণ আরবি শাবান মাস নিয়ে। নবীজি নফল ইবাদতের জন্য সবথেকে বেশি যে মাসটিকে বেছে নিয়েছেন সেটা হচ্ছে শাবান মাস। তাই আমাদেরও এই মাসটিকে যথেষ্ট ব্যবহার করা উচিত এবং কিভাবে এই মাসটাকে ব্যবহার করবে সে সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা আমাদের আর্টিকেল আপনাকে পড়তে হবে।

সাধারণত আরবি যে মাসগুলো রয়েছে তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাস হচ্ছে চারটি মাস। এই চারটি মাসের বিভিন্ন আমল খুব সুন্দর ভাবে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ সাজিয়েছেন। আপনি কিভাবে এই মালগুলোকে কাজে লাগাবেন তার সঠিক দিকনির্দেশনা আমাদের প্রিয়নবী আমাদের দিয়েছেন। আমাদের প্রিয় নবী সাবান মাস ধরে ইবাদত বন্দেগী করতেন এবং অনেক বেশি বেশি রোজা রাখতেন। বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে সাবান মাসের মত এত বেশি রোজা রমজান ছাড়া অন্য কোন মাসে আমাদের প্রিয় নবী করতেন না। আজকের বর্ণনায় আপনারা এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

শাবান মাসের হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইবাদত

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসে বেশি বেশি নফল ইবাদত করতেন এবং বেশি বেশি রোজা রাখতেন। এ সম্পর্কে বহু হাদিস আমরা সংগ্রহ করতে পেরেছি এবং এই হাদিসগুলো আজকে আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো এবং আশা করব এখান থেকে একটু হলেও আপনারা প্রাথমিক ধারণা সংগ্রহ করতে পারবেন শাবান মাসের ইবাদত সম্পর্কে।

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবানের পূর্ণমাসে রোজা রাখতেন। তিনি সাবানে রোজা রাখতেন তবে অল্প কিছুদিনে রাখতেন না। এই হাদিসটি বুখারী মুসলিম ও মুসনাদে পাওয়া গেছে।

এছাড়া অন্য একটি বর্ণনাতে আমরা জানতে পেরেছি যে হযরত আয়েশা রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রাখতে থাকতেন, যাতে আমরা বলতাম যে তিনি আর রোজা ছাড়বেন না, আবার তিনি রোজা ভাঙতে শুরু করতেন যাতে আমরা বলতাম যে তিনি আর রোজা রাখবেন না।

এটাই বোঝানো হয়েছে যে সাবান মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি এভাবে রোজা রেখেছিলেন যে মনে হচ্ছিল তিনি সারা বছর রোজা করবেন কিন্তু যখন সাবান মাস শেষ হয় তখন তিনি রোজা রাখা বন্ধ করে দেন।

তাহলে উপরের বর্ণনা থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি যে শাবান মাস আসলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি বেশি করে রোজা রাখতেন যেটা আমাদের জন্য সুন্নত। আমরা যত বেশি রোজা রাখতে পারব ততটাই আমাদের জন্য ভালো হবে। তবে আমরা যদি একটানা রোজার নাও রাখতে পারি তাহলে অবশ্যই শাবান মাসে অল্প অল্প করে রোজা রাখার চেষ্টা করব।

সাবান মাসে নবীজির দোয়া

সাধারণ এই শাবান মাসে নবীজি এই মাসটি কেন্দ্র করে বিশেষ কিছু দোয়া করতেন যে দোয়া গুলো আমাদের জন্য বহু ফজিল।। এবং পুরো মাস ধরে আল্লাহর কাছ থেকে দুইটি বরকত কামনা করতেন। আল্লাহতালার কাছে শাবান মাস এলে শাবান মাসের জন্য আলাদাভাবে বরকত কামনা করতেন এবং পরবর্তী রমজান পাওয়ার জন্য আবেদন করতেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন সেটা নিচে উল্লেখ করা হলো।

“আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান”এই দোয়াটির অর্থ হচ্ছে-হে আল্লাহ! শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজানে পৌঁছে দিন”। মোশনাদে আহমদ ,বাইহাকী। উপরের দয়া থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি যে আমাদের প্রিয় নবী সবসময় এই দোয়াটি পাঠ করার মাধ্যমে সাবান মাসে আমাদের জন্য আরো বরকতময় করার জন্য আল্লাহতালার কাছে প্রার্থনা চেয়েছেন।

এবং এর সঙ্গে তিনি আল্লাহতালার কাছে এটাও চেয়েছেন যে পরবর্তী রমজান মাস পর্যন্ত আমাদের যেন জীবিত রেখে শেষ রমজান মাসে ইবাদত করার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *