রমজান মাসের আমল

আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সব থেকে ইবাদত নয় যে সেটি হচ্ছে রমজান মাস। আমরা কখনো এই রমজান মাস কে অবহেলা করতে পারি না। যদি এই রমজান মাসে ইবাদত করার সুযোগ আমাদের হয় তাহলে আমরা নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতে পারি। শুধুমাত্র যে ফরজ করতে হবে এমন না এর সঙ্গে আরও কিছু আমল রয়েছে যে আমলগুলো আপনি রমজান মাসে করতে পারেন।

আজকে কথা বলার চেষ্টা করব রমজান মাসে কি কি আমল আপনি করতে পারেন এবং এই আমলগুলোর ফজিলত সম্পর্কে। আপনারা যারা রমজান মাসে রোজার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আমলে মশগুল থাকতে চাচ্ছে তারা একটু কষ্ট করে আমাদের এই আর্টিকেল পড়তে পারেন এবং এখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে।

রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল

আল্লাহ তাআলার কোরআনে এসেছে যে রমজান মাসে সম্পূর্ণ কোরআন নাযিল হয়েছে। আল্লাহর বাণী আল-কোরআনে আমাদের জন্য সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়া আছে। রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “রমজান বরকত কয় মাস তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোজা পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরজ করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। এ মাসে আল্লাহ কর্তৃক একটি রাত প্রদত্ত হয়েছে , যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে মহা কল্যান থেকে বঞ্চিত হলো। (সুনান আত-তিরমিজি হাদিস ৬৮৩)

অবশ্যই রমজান মাসে কোন ভাবেই অবহেলা করা যাবে না এবং এই মাসে বেশি বেশি আমলের দ্বারা পরিপূর্ণ করতে হবে। জান্নাতে যাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে রমজান মাসকে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করা। আমরা যদি এই রমজান মাসে সকল আমলগুলো করতে পারি এবং জান্নাতে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করতে পারি তাহলে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবো।

সিয়াম পালন করা যেটা হচ্ছে রমজান মাসে ফরজ একটি কাজ। আপনি রমজান মাসে কোন ভাবেই সিয়াম থেকে বিরত থাকতে পারেন না তাই সবার প্রথমে যে কাজটি করতে হবে প্রত্যেকটি ফর ফর সিয়াম আপনাকে পালন করতে হবে। ইসলামের যে পাঁচটি রুকুন আছে তার মধ্যে একটি হল সিয়াম। রমজান মাসে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন “সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এই মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাদের সিয়াম পালন করে”। সূরা বাকারা আয়াত নাম্বার ১৮৫।

সময়মতো নামাজ আদায় করা রমজান মাসের আরো একটি আমল। সিয়াম পালন করার পাশাপাশি নামাজের গুরুত্ব সব থেকে বেশি রমজান মাসে। নামাজ হল বেহেস্তের চাবি এবং আপনি কোনভাবেই সেই নামাজকে অবহেলা করতে পারে না। কোরআন শরীফে নামাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে “নিশ্চয়ই সালাত মমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময় ফরজ”সূরা নিসা আয়াত 103।

সহীহ শুদ্ধভাবে কোরআন শেখায় এবং কোরআন শেখানো রমজান মাসে উত্তম আমল। সাধারণত যারা কোরআন পড়তে পারেন না তারা এই রমজান মাসে শুদ্ধভাবে শিখতে পারেন তার কারণ হলো রমজান মাসে যথেষ্ট সময় রয়েছে সকলের জন্য। এছাড়াও রমজান মাসে যারা কোরআন শেখাতে পছন্দ করেন যদি কোরআন অন্যকে শেখাতে পারেন তাহলে সেটা খুব ফজিলত রয়েছে।

রমজান মাসের সেহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে। সাহরী খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাই অবশ্যই আপনাকে নিয়ম মেনে সাহরি খেতে হবে রমজান মাসের বরকত পাওয়ার জন্য। ইচ্ছাকৃতভাবে কোনভাবেই সাহারি বাদ দেওয়া যাবে না।

সালাতুত তারাবি পড়া অর্থাৎ সালাতুত তারাবি বা তারাবির নামাজ পড়া এই মাসের অন্যতম একটি আমল। তারাবি হক আদায় করে পড়তে হবে। তারাবির নামাজ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াব হাসিলের আশায় রমজানে কিয়ামু রমজান আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে”। সহি আল বুখারী হাদিস ২০০৯।

এছাড়াও রমজান মাসের প্রত্যেকটি মুহূর্তকে আপনি ইবাদতের মাধ্যমে কাটাতে পারেন। এই মাসে যত বেশি আপনি ইবাদত এবং আমল করবেন আপনার সোয়াবের আল্লাহ তত বেশি ভারী হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *