রজব মাসের ফজিলত ও আমল

আজকে আমরা রজব মাসের ফজিলত ও আমল সম্পর্কে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি। মুসলমান হিসেবে অবশ্যই রজব মাসের আমল সম্পর্কে আমাদের কাছে সঠিক অনেক দিকনির্দেশনা আছে। তবে রজব মাসের ফজিলত ও আমল সম্পর্কে সঠিক দিক নির্দেশনা আরো অন্যান্য তথ্য যারা জানতে চাচ্ছেন তারা আমাদের এই আর্টিকেল পড়তে পারেন।

আরবি মাসের সপ্তম মাস হচ্ছে রজব। এই মাসের সম্পূর্ণ নাম হচ্ছে আর রজব আল মুরাজযাব। রজব অর্থ সম্ভ্রান্ত প্রাচুর জমায় এবং মহান। মুরাজজব অর্থ সম্মানিত। আরবি মাসের যে মহামান্বিত চারটি মাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে রজব হচ্ছে একটি।

এ সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “আল্লাহ তায়ালা আসমান জমিন সৃষ্টি করার দিন থেকেই বৎসর হয় 12 মাসে আর এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত তিনটি একাধারে জিলকদ জিলহজ ও মহরম এবং চতুর্থ হল রজব মুদার। রজব মুদার যা জুমা দল উখরা বা সাবান মাসের মধ্যবর্তী।”

রজব মাসের হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর পালন করা কিছু আমল

উম্মে সালমা রাজা আল্লাহু থেকে বর্ণিত “যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম রমজান মাস সারা সবচেয়ে বেশি রোজা পালন করতেন শাবান মাসে অতঃপর রজব মাসে”। এখানে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাজিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন “যখন রজব মাস আসতো তা আমরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলের আধিক্য দেখে বুঝতে পারতাম।”

তাই বলাই যায় যে রজব মাসে আমল করাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং নবীজি রজব মাসের ১০টা করে রোজা রাখতেন এবং শাবান মাসের রোজা রাখতেন ২০ টা করে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন”রজব হল আল্লাহর মাস, সাবান হল আমার মাস, রমজান হলো আমার উম্মতের মাস”। এই হাদীসটি আমরা তিরমিজি শরীফে পেয়ে যাব। তিনি আরো বলেন”যে ব্যক্তি রজব মাসে (ইবাদত দ্বারা) ক্ষেত চাষ দিল না এবং শাবান মাসে খেত আগাছা মুক্ত করল না সে রমজান মাসে ফসল তুলতে পারবে না।”

উপরের কথাগুলো আমরা পর্যালোচনা করলে অবশ্যই বুঝতে পারি রজব মাসের গুরুত্ব কতটুকু। আমাদের সামনে যদি রজব মাস আসে তাহলে অবশ্যই সে রজব মাসে অনেক অনেক আমল করার প্রস্তুতি আমাদের আগে থেকেই গ্রহণ করতে হবে।

রজব মাসের রোজা

রমজান মাসে রোজার বিষয়ে যে বর্ণনা আছে সে বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে বিশেষত প্রতি সোমবার বৃহস্পতিবার শুক্রবার এবং মাসের বেশ কিছু তারিখে রোজা রাখা উচিত। যেমন এক তারিখ, দশ তারিখ, ১৩ তারিখ, ১৪ তারিখ, ১৫ তারিখ, ২০ তারিখ, ২৯ তারিখ, ৩০ তারিখ রোজা রাখতে হবে।

অধিকার এ নফল নামাজ পড়ার চেষ্টা করতে হবে। এ রজব মাসে যত বেশি সম্ভব তত তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে হবে এবং অন্যান্য ইবাদতগুলো করতে হবে। আপনি রজব মাসে যত বেশি কোরআন তেলাওয়াত করবেন আপনি তত বেশি সওয়াব অর্জন করতে পারবেন।

এ মাসের গুরুত্বপূর্ণ আরো একটি আমল হচ্ছে কোরআন পাঠ করা এবং কোরআন তেলাওয়াত শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেওয়া মুসলমান হিসেবে আপনার কর্তব্য। তাই রজব মাসে ইবাদতের মধ্যে কোরআন তেলাওয়াত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।

রজব মাসের ফজিলত, মর্যাদা ও আমল

রজব মাসের ফজিলত মর্যাদা ও আমল সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। আমরা যদি কোরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াত এবং হাদিস শরীফের বিভিন্ন বর্ণনা লক্ষ্য করি তাহলে সেখানে বুঝতে পারব যে কতটা মহামান্বিত এই মাস।

নবীজি নিজেও রজব মাস সম্পর্কে বহু বর্ণনা তার জীবনকালে বিভিন্ন জায়গাতে দিয়েছেন যেটা আমরা হাদিস থেকে জানতে পেরেছি। ঈমানদার ব্যক্তি হিসাবে এবং বুদ্ধিমান ঈমানদার হিসেবে রজব মাস পেলে সেই রজব মাসকে অবহেলা না করে বেশি বেশি আমল এবং বেশি বেশি ইবাদত করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *