লাইলাতুল কদরের আমল

আমরা শেষ নবীর উম্মত এবং আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মত হতে পেরে আমরা সব সময় সম্মানিত। আমাদের সৌভাগ্য এতটাই ভালো যে আমরা শেষ নবীর উম্মত হতে পেরেছি। তার মধ্যে একটি উদাহরণ হচ্ছে শেষ নবীর উম্মত হিসাবে লাইলাতুল কদর আমাদের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে। যেটা এমন একটি রাত যে এই রাত্রিতে ইবাদত করার ফলে আমরা হাজার মাসের এবাদত এর সম পূর্ন অর্জন করতে পারব।

মুসলমানদের ইতিহাসে যদি মহামান্বিত রজনীর কথা বলা হয় তাহলে সব থেকে বড় এবং সব থেকে ফজিলতপূর্ণ রজনী হচ্ছে লাইলাতুল কদর। এই লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অনেকেই অনেক ধরনের তথ্য জানেন আজকে আমরা সকল তথ্যের আলোকে সংক্ষিপ্ত কোন একটি আলোচনা করতে চাচ্ছি। তার কারণ হলো লাইলাতুল কদর সম্পর্কে কত হাজার হাজার যে আলোচনা আছে এবং ভবিষ্যতে কত হাজার হাজার যে আলোচনা হবে সেটা কেউ ধারণাই করতে পারে না।

লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও আমল সমূহ

আমরা জানি যে নবীজির উম্মত হিসাবে আল্লাহ তা’আলা আমাদের একটি উপহার হিসেবে লাইলাতুল কদর দিয়েছেন। তবে এই লাইলাতুল কদর কবে সেটা পরিষ্কারভাবে আল্লাহ তাআলা আমাদের জানাননি এবং নবীজিকেও জানাননি। যার কারণে এই লাইলাতুল কদর আমাদের তালাশ করতে হবে তবে এই লাইলাতুল কদরে যে আমলগুলো আমাদের করা উচিত সে সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত।

আপনি যেই আমলই করুন না কেন লাইলাতুল কদরে যদি সেই আমলটি করেন তাহলে কয়েক হাজার গুণ বেশি সওয়াব আপনার আমলনামায় লেখা হবে। তার কারণ হলো আমরা বিভিন্ন হাদিস শরীফে এবং বিভিন্ন কুরআনের আয়াতে জানতে পেরেছি যে লাইলাতুল কদর এতটাই মহামান্বিত রজনী যেই রজনীতে ইবাদত করলে কয়েক হাজার বছরের ইবাদতের সমান পূর্ণ আল্লাহ তা’আলা আমাদের নামে লিখে দেবেন।

তাই আমার পক্ষে লাইলাতুল কদর এর ফজিলত ও এর আমল সমূহ বর্ণনা করে শেষ করা সম্ভব নয়। মানুষ হিসাবে কারোই এই দিনের ফজিলত হিসেবে কথা বলে শেষ করার সামর্থ্য নেই। তবে অবশ্যই আমাদের উচিত সবকিছু ভুলে বছরে এই একটি দিনকে তালাশ করা যেটা লাইলাতুল কদর হিসেবে পরিচিত।

লাইলাতুল কদর বা সবে কদর এর আমল সমূহ

লাইলাতুল কদর হচ্ছে একটি মহামান্বিত রজনী যেটা আল্লাহ তায়ালা আমাদের কাছে গোপন রেখেছেন। তবে রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করতে আল্লাহ তা’আলা আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

আমার মতে আপনাকে কোন একটি নির্দিষ্ট রাতে ইবাদত না করে প্রত্যেকটি বেজোড় রাত অথবা রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের প্রত্যেকটি রাতেই লাইলাতুল কদর তালাশ করা উচিত। এতে করে আপনি যদি এই দশ দিনের মধ্যে যেকোনো একদিন লাইলাতুল কদর তালাশ করতে পারেন এবং সেই দিনে ইবাদত করে আল্লাহ তা’আলা নৈকট্য অর্জন করতে পারেন তাহলে কয়েক হাজার বছর ইবাদত করেও আপনি এতটা সওয়াব পাবেন না।

লাইলাতুল কদরে আপনাকে বেশি বেশি করে নফল সালাত আদায় করতে হবে। বিভিন্ন বর্ণনায় বিভিন্ন ধরনের সালাত পড়ার নিয়ম উল্লেখ করা হয়েছে তবে আপনাকে প্রধান গুরুত্ব দিতে হবে নামাজ পড়ার মনোযোগের উপর। আপনি যেই মাযহাব মানুননা কেন আপনি যেই ভাবেই নামাজ পড়ুন না কেন আপনাকে এমন ভাবে নামাজ পড়তে হবে যেখানে আপনার মনোযোগ থাকে শুধুমাত্র সৃষ্টিকর্তার ওপর।

বেশি বেশি করে কোরআন পাঠ করতে হবে। লাইলাতুল কদরের এই মহামান্বিত রাতে আপনি যত বেশি কোরআন পাঠ করবেন আপনি তত বেশি সওয়াব অর্জন করতে পারবেন।

লাইলাতুল কদরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই রাতে আপনাকে দোয়া করতে হবে এবং এই দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি থাকে। সারা জীবনে যত বেশি পাপ করেই থাকুন না কেন আপনি যদি লাইলাতুল কদর তালাশ করতে পারেন এবং খাস তওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে ঈমানদার হতে পারেন তাহলে এটাও বর্ণনা আছে যে আপনাকে সম্পূর্ণ পাপ মুক্ত করে দেওয়া হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *