কোরবানির আমল

আমরা সকলে জানি যে মুসলমানদের দুটি আনন্দের দিন একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর এবং অপরটি হচ্ছে ঈদুল আযহা। সাধারণত ঈদুল আযহা কে আমরা কোরবানির ঈদ বা কোরবানির দিন হিসেবে চিনি। আজকে আমরা সেই কোরবানির দিন সম্পর্কে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব। জিলহজ মাসের ১০ নাম্বার দিন হচ্ছে ঈদুল আযহার দিন অর্থাৎ কোরবানির দিন।

এই কোরবানির দিনে কোরবানি সহ অন্যান্য যে আমলগুলো রয়েছে যেগুলো একজন ঈমানদার মুসলিম হিসেবে আপনাকে করতে হবে সেই আমল সম্পর্কে সঠিক কিছু তথ্য আমাদের কাছে আছে।। এই তথ্যের আলোকে আমরা আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে চাই।

ইসলামে কোরবানির গুরুত্ব

ইসলামে কোরবানির বেশ গুরুত্ব রয়েছে এবং আমরা জেনেছি যে বিভিন্ন সময় কোরআনের বিভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা আমাদের কোরবানির সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন তাই এটা আমাদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন “আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেওয়া চতুষ্পদ জন্তু যবে করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে”। এটা সূরা হজ্ব এর ৩৪ নাম্বার আয়াত।

ছাড়াও এই প্রসঙ্গে আরো একটি বর্ণনা আছে সেখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন “অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন” ।এটা সূরা কাউসার এর দুই নম্বর আয়াত।

কোরবানি সংশ্লিষ্ট আরও একটি আয়াত আছে এবং সেখানে কোরবানি নামাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরো একটি আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন “আপনি বলুন আমার নামাজ আমার কোরবানি এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই”। সূরা আনআম 162 নাম্বার আয়াত।

কোরবানি সম্পর্কে একটি বিশেষ হাদিস আমাদের কাছে আছে সেখানে মোহাম্মদ ইবনে শিরীন রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত “আমি ইবনে ওমর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহুরের নিকট কোরবানী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, তা ওয়াজিব কিনা? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু কোরবানি করেছেন, তারপরে মুসলমানরাও কোরবানি করেছেন এবং এ সুন্নত অব্যাহত ভাবে প্রবর্তিত হয়েছে,”। এই হাদিসটি ইবনে মাজাহিফা এর ৩১২৪ নম্বর এবং তিরমিজি তে ১৫১২ নম্বরে পাওয়া যাবে।

কোরবানির দিনের বিশেষ কিছু আমল

কোরবানির দিনে শুধুমাত্র যে কোরবানি দেওয়া আইন রয়েছে এমন নাই এর পাশাপাশি এখানে যারা কোরবানি দিতে পারবেন না অথবা যারা কোরবানি দিতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এমন কিছু আমল রয়েছে যেগুলো অবশ্যই পালনীয়।

সবার প্রথমে আপনাকে সকাল সকাল উঠতে হবে এবং ফজরের সালাত আদায় করতে হবে। ফজরের সালাত ইমামের সঙ্গে মসজিদে উপস্থিত হয়ে আপনাকে আদায় করতে হবে।

এরপরে গোসল করতে হবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে সর্বোত্তম কাপড় ব্যবহার করে ঈদের সালাত আদায়ের জন্য ঈদগাহ ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।

ঈদের ময়দানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে যখন বাড়ি থেকে রওনা দিবেন তখন অবশ্যই মনে মনে ঈদের সালাতের তাসবিহ পাঠ করতে করতে যেতে হবে।

এরপরে মসজিদে ঈদগা মাঠে ঈদের জামাতে একই সঙ্গে সালাত আদায় করতে হবে। ঈদগাহ এক পথে যাওয়া এবং অন্য পথে আসা অনেকেই সুন্নত মনে করেন।

ঈদের নামাজ শেষে যে খুতবা দেওয়া হয় সেই খুতবাটি অবশ্যই শুনতে হবে এবং এই খুতবা শোনা ওয়াজিব।

এরপরে বাসায় ফিরে এসে যাদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য আছে তারা নিজ নিজ কোরবানি সম্পন্ন করবেন। কুরবানী সম্পূর্ণ হওয়ার পরে কোরবানির মাংস সঠিকভাবে ভাগ করে সেটা সঠিক কাজে লাগানোর চেষ্টা করবি।

তবে যারা কোরবানি দিতে পারে না তাদের কাছে একটি আমল আছে যে আমলের মাধ্যমে তারা কোরবানির সব অর্জন করতে পারবেন যেটা আমরা নিচে আলোচনা করছি।

কোরবানি দেওয়ার বিশেষ আমল

কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য যাদের নেই তারা চাইলে এমন একটি আমল করে কোরবানির পূর্ণ অর্জন করতে পারেন সেটি সকলের পক্ষে সম্ভব। জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পূর্বে আপনি যদি আপনার নখ এবং চুল পরিষ্কার করে পরবর্তী নয় দিন নখ চুল রেখে দেন এবং নিয়ত করেন কোরবানির উদ্দেশ্যে তাহলে কোরবানির দিন সকালবেলা নামাজ পড়ে এসে এগুলো পরিষ্কার করলে একটি কোরবানির সব আপনার নামে লেখা হবে বলে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *