দোয়া কবুলের আমল

মুসলমান হিসেবে সব সময় আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকা আমাদের কর্তব্য। আমরা যত বেশি সৃষ্টিকর্তাকে খুশি রাখতে বাসবো আমাদের ইহকাল এবং পরকাল তত বেশি ভালো থাকবে। তবে আমরা বর্তমানে কেন জানিনা আমাদের সৃষ্টিকর্তা থেকে অনেক বেশি দূরে চলে যাচ্ছে। আমরা আমাদের পরকালের জীবনকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না আমরা আমাদের ইহকালের জীবনকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি যেটা সবথেকে বড় বোকামি।

তবে এই সকল জিনিস থেকে ফিরে আসার একটি উপায় আছে সেটি হল আল্লাহর কাছে একবারে প্রাণ খুলে মাপ চেয়ে ফিরে আসা এবং বেশি বেশি দোয়ার মাধ্যমে তার নৈকট্য হাসিল করা। আপনি আল্লাহ তাআলার যত বেশি কাছে যেতে পারবেন আপনার পরকালের জীবন তত বেশি সুন্দর হবে। সৃষ্টিকর্তার কাছে যাওয়ার সবথেকে সঠিক উপায় হচ্ছে সিজদার মাধ্যমে তাকে খুশি করা। ছাড়া আপনি দোয়ার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার কাছে আপনার মনের চাওয়া পাওয়া ব্যক্ত করতে পারেন।

দোয়া কবুলের যে সকল নেক আমল ও উসিলা

শুধুমাত্র আপনি হাত তুলে দোয়া করলেন এবং সেই দোয়া কবুল হয়ে গেল এমন কোনভাবেই সম্ভব নয়। সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করতে হলে মন থেকে দোয়া করতে হবে এবং কিভাবে দোয়া করলে আপনি এই দোয়াটি কবুল হয়েছে বলে মনে করবেন তার কিছু আমল আমরা আজকে আমরা আপনার জানানোর চেষ্টা করব।

প্রথমত আপনি চাইলে কোরআন থেকে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়াত তেলাওয়াত করবেন যে আয়াতগুলো আল্লাহ তা’আলা অনেক পছন্দ করেন এবং সেই আয়াতের মাধ্যমে আয়াতের ওসিলা দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে কিছু চাইবেন।

দিনে রাতে যখনই অবসর সময় পান তখন দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করবেন এবং সেই সালাত আদায় করার পরে নির্জনে বসে দোয়া করবেন অবশ্যই সৃষ্টিকর্তা আপনার কথা শুনবে।

রোজাদার ব্যক্তিদের আল্লাহ তায়ালা সবথেকে বেশি পছন্দ করেন তার কারণ হলো তিনি বলেছেন যে রোজাদার ব্যক্তিরা শুধুমাত্র রোজা থাকে আল্লাহকে খুশি রাখার জন্য আর এই ইবাদতটি সম্পূর্ণ আল্লাহর জন্য। আপনি যদি রোজা রেখে সৃষ্টিকর্তার কাছে কিছু চান তাহলে এটা হতেই পারে না তিনি আপনাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেবে।

রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করার সবথেকে ভালো সময় হচ্ছে ইফতারের আগে ইফতার কে সামনে রেখে দোয়া করা। আপনার যদি কিছু চাওয়ার থাকে তাহলে রোজা রাখুন এবং ইফতারকে সামনে রেখে দুহাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করুন। সৃষ্টিকর্তা কখনোই আপনাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেবে না।

দোয়া কবুল হওয়ার সবথেকে ভালো কিছু সময়

সৃষ্টিকর্তার বান্দা হিসেবে আপনি যদি আল্লাহর কাছে কিছু চান তাহলে আল্লাহ আপনাকে কোন ভাবে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে পারেনা। তবে চাওয়ার মতন চাইতে হবে এবং সেই চাওয়ার মতন চাইতে গেলে এমন কিছু সময় আছে যে সময়গুলোতে আপনি যদি দয়া করেন তাহলে সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই আপনার দোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কবুল করবে।

রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আপনি যদি দোয়া করেন তাহলে আপনার দোয়া কবুল হবে সঙ্গে সঙ্গে। অর্থাৎ আমরা রাতে যে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করি তার পরে দোয়া করলে আল্লাহ তা’আলা আপনাকে কবুল করবেন।

আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে যে সময়টুকু রয়েছে সেই সময়টুকুতে আপনি যদি দোয়া করেন তাহলে অবশ্যই সেটা কবুল হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে আযান ও ইকামতে মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।

জুমার দিনের দোয়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। যারা বুদ্ধিমান ঈমানদার তারা জুমার দিনকে কোনভাবেই নষ্ট করতে চায় না এবং সারাটা দিন আপনি এখানে দোয়া করতে পারবেন এবং সেই দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।

সেজদারত অবস্থায় একজন বান্দা তার সৃষ্টিকর্তার সব থেকে কাছে যেতে পারে এবং সেই সেজদারত অবস্থায় তিনি যদি দয়া করেন তাহলে আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তার দোয়া কবুল করবে।

ফরজ নামাজের পর অবশ্যই দোয়া করতে হবে এই দোয়ার মাধ্যমে আপনি আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারবেন।

এছাড়াও কদরের রাতের দোয়া এবং আরাফাতের দিনের দোয়া আল্লাহর কাছে অনেক বেশি পছন্দের তাই এই সময়গুলোকে কোনভাবে মুমিন বান্দা হিসেবে নষ্ট করা উচিৎ নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *