আসরের নামাজের পর আমল

সাধারণত আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতালা আমাদের জন্য দিনের মধ্যে পাঁচ ওয়াক্তের সালাত ফরজ করেছেন। এই নামাজ ইতিহাস সম্পর্কে অবশ্যই জানতে গেলে অবশ্যই আমাদের শবে মেরাজের ঘটনাটি খুব সুন্দর ভাবে জানতে হবে। যাই হোক আজকে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি এই পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের মধ্যে আসরের নামাজ এর পরে কি কি আমল আমরা করতে পারি।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে যে সময়টুকু অত্যন্ত সুন্দর একটি সময়। এই সময় যদি দোয়া করা হয় তাহলে সেই দোয়া হয়ে যায় সঙ্গে সঙ্গে। এই দিক থেকে বিবেচনা করলে অবশ্যই আসরের সালাতের পরে কিছু কিছু আমল রয়েছে যে আমলগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা যখনই সময় পাব আসরের পরে যে আমলগুলো আছে সেগুলো করে নেব এতে করে আমরা অনেক সোয়াব অর্জন করতে পারব।

আসরের নামাজের পরে কি কি আমল করতে হয়

আমাদের মধ্যে অনেকেই জানিনা আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিবের নামাজ পর্যন্ত যে সময়টুকু পাওয়া যায় সেই সময়টুকু দোয়া কবুল হওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। তাই মুমিন ব্যক্তি হিসেবে সব সময় এই সময়গুলোকে কাজে লাগানো উচিত। আজকে আমরা কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে জানার চেষ্টা করব আসরের নামাজ পড়ে কি কি আমল আমরা করতে পারি।

আসরের নামাজের পরে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ আমল হল দোয়া করা। তার কারণ হলো বিভিন্ন হাদিস শরীফে আমরা জানতে পেরেছি যে জুমার দিনে যদি আসরের নামাজের পরে দোয়া করা হয় তাহলে সেই দোয়াটি সঙ্গে সঙ্গে কবুল হয়। সপ্তাহে সাত দিনের মধ্যে জুমার দিন সর্বশ্রেষ্ঠ দিন এবং সেই দিনের ইবাদত আল্লাহর কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

এছাড়াও হাদিস শরীফে জুমার দিনের বিভিন্ন সময় দোয়া করার জন্য বিশেষ উপদেশ দেওয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সেই সময়টা যদি কোন মুসলিম নামাজ আদালত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চাই আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ত তার ইঙ্গিত দেন। বুখারি হাদিস 6400 নম্বর।

আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন শুক্রবারে আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। বিখ্যাত সিরাপ গ্রন্থ যাদুল মাআ’দ বর্ণনা আছে, জন্মদিন আসরের নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল হয়। যাদুল মাআ’দ ২/৩৯৪।

আসরের শেষ সময় দোয়া কবুল হওয়া

আমরা সকলেই অবগত আছি যে আসরের শেষ সময় টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় এবং এই সময়ে বিশেষভাবে দোয়া করলে সেই দোয়া কবুল হয়। এখানে আসরের শেষ সময় বলতে সূর্য ডোবার আগ মুহূর্তে যে সময়টি পাওয়া যায় সেই সময়কে বোঝানো হয়েছে। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাজিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন”ঝুমার দিনে ১২ ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোন মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এ মুহূর্তটি তোমার আসরের শেষ সময়ের অনুসন্ধান করো। আবু দাউদ হাদিস নাম্বার ১২১।

ওপরের উল্লেখ্য হাদিসগুলো পড়ার পরে অবশ্যই আমাদের মাঝে জুমার দিনে অথবা আসরের শেষ সময়ের ইবাদত সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব আসরের ফরজ সালাত আদায়ের পর বসে থেকে বিভিন্ন ধরনের দোয়া করা এবং বিভিন্ন ধরনের ইস্তেগফার করতেন। মনে মনে আল্লাহ তাআলার জিকির করতে এবং এর পাশাপাশি দরুদ পাঠ করতে।

এবং সাবাস শেষে দুই হাত তুলে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা আমাদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি ইবাদত। মুমিন ঈমানদার ব্যক্তি হিসেবে অবশ্যই জীবনের এই সময়টুকু নষ্ট করা উচিত নয় এবং সব সময় চেষ্টা করা উচিত এই সময়টুকুকে কাজে লাগানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *