ফরজ নামাজের পর আমল

 

মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে। আমরা সকলে অবগত আছি যে আমাদের শেষ নবী এবং আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিরাজের রাতে স্বার্থ আসন পাড়ি দিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে আল্লাহতালা তাকে বিশেষ কিছু জিনিস দিয়েছিলেন যার মধ্যে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাত আদায় একটি।

মুসলমান হিসেবে অবশ্যই ফরজ সালাতগুলো আদায় করা আমাদের কর্তব্য এবং এই নামাজ যদি আমরা আদায় না করি তাহলে আমরা কোনভাবে জান্নাতে যেতে পারবো না। নামাজ হলো জান্নাতের চাবি তাই আমাদের ফরজ নামাজগুলো আদায় করতে হবে এবং এই ফরজ নামাজ আদায়ের পরে এমন কিছু আমল রয়েছে যে আমলগুলো আপনার জায়গার জান্নাতের পাকাপোক্ত করবে।

আমরা বিভিন্ন হাদিস থেকে এবং বিভিন্ন বড় বড় লেখকের বই থেকে এমন কিছু তথ্য জানতে পেরেছি যেখানে ফরজ সালাতের পর এই আমলগুলো করার অনেক বেশি ফজিলত রয়েছে। বিভিন্ন বর্ণনায় বিভিন্ন ধরনের আমলের কথা উল্লেখ রয়েছে তবে আমার মতে আপনি যেকোনো একটি আমল বেছে নিতে পারেন এবং এই আমলটি মনে প্রাণে গভীরভাবে করতে পারেন যেটা আপনাকে মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে জান্নাতে পাকাপোক্ত জায়গা তৈরি করবে।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন “প্রত্যেক ফরজ নামাজের শেষে কিছু দোয়া আছে যে ব্যাক্তি ওইগুলো পড়ে বা কাজে লাগায় সে কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না”। সহীহ মুসলিম হাদিস নাম্বার ১২৩৭।

ফরজ সালাতের পর কি আমল করব

ফরজ সালাতের পর আপনি বেশ কয়েকটি আমল করতে পারেন যার মধ্যে তাকবীর ও জিকির ও অন্যান্য দোয়া অন্তর্ভুক্ত।

আপনি চাইলে প্রত্যেক ফরজ নামাজ এর শেষে তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ বলবেন। এখানে আস্তাগফিরুল্লাহ বেশ কয়েক ভাবে বলা যায় যে যে নিয়মটি মেনে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে চাচ্ছেন সেটা বলতে পারেন। আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক ফরজ নামাজের শেষে তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ বলতেন। মুসলিম হাদিস ১২২২।

এরপরে আপনি চাইলে “আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারকতা ইয়া যাল-জালা-লী ওয়াল ইকরাম”পড়তে পারেন। মুসলিম হাদিস ১২২১।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ সালাতের পূর্বে সুবহানাল্লাহ 33 বার পড়তেন এর সঙ্গে আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার পড়তেন এবং এর সঙ্গে আল্লাহু আকবার 33 বার করতেন। এরপরে “লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর”। এগুলো পাঠ করলে গুনা সমূহ সমুদ্রের ফেনারসের মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়।মুসলিম হাদিস ১২৪০।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার জন্য জান্নাতের প্রবেশের পথে মৃত্যু ব্যতীত আর কোন বাঁধা থাকবে না”। নাসায়ি হাদিস ৯৪৪৮ এবং তারা বাণী হাদীস ৭৮৩২।

খরচ সালাতের পরে আরো একটি আমল আপনারা করতে পারেন সেটা হচ্ছে সূরা ইখলাস সুরা ফালাক সূরা নাস প্রত্যেকটি তিনবার করে পড়তে পারে এটা ফরজ ও মাগরিবের নামাজের পরে
এখানে উল্লেখ আছে যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন “সকাল সন্ধ্যায় এগুলো পাঠ করলে তোমর আর কিছুই দরকার হবে না”।

এছাড়া আরো একটি আমল রয়েছে সেটি হচ্ছে ফরজ ও মাগরিবের পর আপনি যদি দরুদ শরীফ ১০ বার পড়েন তাহলে কেয়ামতের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফায়াত লাভ করবেন আপনি।

এছাড়া ফরজ সালাতের পূর্বে আরো বহু আমল রয়েছে যে আমলগুলো আপনারা চাইলে করতে পারেন। মোটকথা হলো যারা ঈমানদার আছেন তারা একটু হলেও বুদ্ধিমান অন্যদের থেকে আমার মতে। তার কারণ হলো যারা ঈমানদার তারা সঠিক সময়ে সঠিক ইবাদতগুলো করেন এবং এই মূল্যবান সময় গুলো কোনভাবেই নষ্ট করতে চান না। এতে করে তারা বেশি বেশি সওয়াব অর্জন করতে পারেন এবং এই বেশি সওয়াবের বলে হয়তো তারা একদিন সবাই মিলে একসঙ্গে জান্নাতবাসী হতে পারবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *